শনিবার বোলপুরে রোড শো–র পর সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দেগেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শিক্ষাব্যবস্থা, অর্থনৈতিক অবস্থা সবেতেই পশ্চিমবঙ্গের হাল বেহাল বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। কিন্তু সে সব বক্তব্যের অধিকাংশই মিথ্যা বলে সোমবার দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অমিত শাহের দাবি–দাওয়াকে ‘গার্বেজ অফ লাইস’ বলে আক্রমণ করেছেন তিনি। একইসঙ্গে মমতা এদিন জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সব অভিযোগের জবাব তিনি কাল, মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর দেবেন।
এদিন অমিত শাহকে বিশেষ পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। তাঁকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি তো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আপনি কোনও দলীয় কর্মীর লেখা বক্তব্য পরীক্ষা না করেই বলে দিচ্ছেন? এটা আপনাকে শোভা দেয় না। একটু কষ্ট করে ক্রস চেক করে নিন। তার পর বলুন।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘কাল (রবিবার) তিনি তাঁর বক্তব্যের অধিকাংশই সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে গিয়েছেন। গার্বেজ অফ লাইজ। অমিত শাহ বলেছেন, আমরা নাকি গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করিনি। কিন্তু আমরা দেশে গ্রামীণ রাস্তা তৈরিতে প্রথম স্থানে রয়েছি। এটা আমার কথা নয়। এই তথ্য কেন্দ্রীয় সরকারেরই দেওয়া।’
করোনার ভ্যাকসিন এলেই বাংলায় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ লাগু হবে বলে রবিবার জানিয়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু এই দাবিকে এদিন উড়িয়ে দিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘বিজেপি হল চিটিংবাজ পার্টি। রাজনীতির স্বার্থে বিজেপি নেতারা যা কিছু বলতে পারেন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস করার সময় থেকে এর বিরোধীতা করেছি আমরা। আমি বলেছি, এই দেশের প্রত্যেকটা মানুষ এ দেশের নাগরিক। মতুয়ারা নাগরিক। উদ্বাস্তু কলোনীগুলিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আমরা এনপিআর, এনআরসি–রও বিরুদ্ধে। আমরা এই লড়াই লড়ে যাব।’ মমতা বিজেপি–কে আক্রমণ করে বলেন, ‘ওরা এ দেশের মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারে না। ওরা ওদের নিজেদের ভবিষ্যত দেখুক।’
বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৫ বছরে ‘সোনার বাংলা’ গড়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অমিত শাহ–সহ প্রত্যেক বিজেপি নেতা। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও বহুবার একই কথা বলেছেন। এ নিয়ে অমিত শাহকে কটাক্ষ করে এদিন মমতা প্রশ্ন করেন, ‘উনি জানেন তো সোনা কাকে বলে, রুপো কাকে বলে, তামা কাকে বলে, কপার কাকে বলে! আর উনি এটাও জানেন নিশ্চয়ই, আর্মারি কাকে বলে, আর্মস কাকে বলে, দাঙ্গা কাকে বলে, কমিউনাল কাকে বলে, সেক্যুলার কাকে বলে!’