সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ব্যবস্থা নিলে তাঁদের এই দিনটা দেখতে হত না। খালি হয়ে যেত না তাঁদের কোল। একটা স্বপ্ন শেষ হয়ে যেত না। এমনই মন্তব্য করলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের মা। মুখ্যমন্ত্রী যে জুনিয়র ডাক্তারদের একাধিক দাবি মেনে নিয়েছেন, সেটার রেশ ধরে মঙ্গলবার তরুণী চিকিৎসকের মা বলেন, ‘আজ আমার মেয়েকে হারিয়ে ফেলেছি। তারপরে ওঁনাদের (মমতা সরকার) টনক নড়বে? ২০২১ সালে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ ছিল। তখন যদি মুখ্যমন্ত্রী এই পদক্ষেপটা নিতেন, তাহলে আজ কোল ফাঁকা হত না। আমার মেয়েটা হারিয়ে যেত না।’
‘জয় সেদিনই হবে….'
আর সেই কথাটা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তরুণী চিকিৎসকের মা। সেইসঙ্গে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে যা হয়েছে, সেটাকে 'জয়' হিসেবে দেখতে রাজি নন তিনি। স্পষ্টভাবে তিনি বলেছেন, ‘জয় সেদিনই হবে, যেদিন আমার মেয়ের আসল খুনিদের বিচার হবে।’ একইসুরে তরুণী পরিবারের অন্য সদস্যদেরও বক্তব্য, একটা সকালই তাঁদের জীবনের সব ‘খুশি' এবং ‘আনন্দ’ ছিনিয়ে নিয়েছে। 'আমাদের মেয়েটা যদি ফিরে আসত, সেটাই আমাদের কাছে খুশির বিষয় হত। তাছাড়া আরও কোনও বিষয়ে আমাদের খুশি বা আনন্দের ব্যাপারই নেই।'
'সুপ্রিম কোর্টের উপরে ১০০% ভরসা আছে'
আপাতত তাঁরা শুধু অপেক্ষা করছেন সেই দিনটার জন্য, যেদিন তাঁদের মেয়ে বিচার পাবে। আর মেয়েকে আদালত যে বিচার দেবে, সেই বিষয়ে আস্থা রেখেছেন তরুণী চিকিৎসকের বাবা। তিনি জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের উপরে ১০০ শতাংশ ভরসা আছে। শীর্ষ আদালতের তত্ত্বাবধানে পুরোটা এগিয়ে যাবে এবং তাঁর মেয়ে বিচার পাবেন বলে আশাপ্রকাশ করেছেন তরুণী চিকিৎসকের বাবা।
আর যেদিনের শুনানির পরে সেই মন্তব্য করেছেন তরুণী চিকিৎসকের বাবা, সেদিনই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি নিয়েও সিবিআইকে রিপোর্ট পেশ করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। গত ৯ সেপ্টেম্বর এবং মঙ্গলবারের শুনানিতে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় স্টেটাস রিপোর্ট পেশ করেছে সিবিআই। মঙ্গলবারের শুনানিতে আর্থিক দুর্নীতির মামলা নিয়েও সিবিআই যাতে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট পেশ করে, সেই আর্জি জানানো হয়। যা মেনে নেয় শীর্ষ আদালত।
সন্দীপ ও তাঁর ‘লাগামছাড়া দুর্নীতি’
আর্থিক দুর্নীতির মামলাতেই সন্দীপকে প্রথমে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। পরবর্তীতে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করা করেছে। অভিযোগ উঠেছে যে ২০২১ সালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের অধ্যক্ষ হয়ে আসার পর থেকে লাগামছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে আগেও আন্দোলন হয়েছিল।