সংঘাতের রাস্তা থেকে তিনি সরছেন না। নানাভাবে এটা বোঝানোর চেষ্টা করছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। শিল্পীদের বয়কট ইস্যুতে সংঘাতের সূত্রপাত। আর সেটা মিটমাট করে নেওয়া তো দূরের কথা সেই সংঘাত যেন বাড়ছে ক্রমশ।
এবার এক্স হ্যান্ডেলে একটি ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেছেন কুণাল ঘোষ। সেখানে তিনি লিখেছেন, ২০০ পাতার বই ১৫১ পাতা থেকে পড়া শুরু করলে জানা বোঝার ক্ষেত্রে অসম্পূর্ণতা থেকে যায়। এটুকুই লিখেছেন তিনি। তার মধ্য়েই অনেকে দুয়ে দুয়ে চার করতে শুরু করেছেন।
সম্প্রতি শিল্পী বয়কট ইস্যুতে নাম না করে কুণাল ঘোষ ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মধ্য়ে সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বাংলার রাজনীতিতে কুণাল ঘোষ অভিষেকপন্থী বলেই পরিচিত ছিলেন। কী এমন হল যে কুণাল তাঁর নিশানা বদলে ফেললেন? অনেকের মতে, কেবলমাত্র অভিষেকপন্থী হয়ে থাকলে তৃণমূলে কোণঠাসা হয়ে যেতে হয়। এমনকী শান্তনু সেনের মতো পরিস্থিতিও হতে পারে। সেকারণেই কি দ্রুত শিবির বদলে ফেললেন কুণাল? নাকি পুরোটাই তৃণমূলের অন্দরের সাজানো চিত্রনাট্য? নানা চর্চা হচ্ছে বাংলার রাজনীতির আঙিনায়। সেই সঙ্গে নেটপাড়ায় শোরগোল পড়েছে কুণাল ঘোষের পোস্টে। অনেকেই তাঁর আগের অবস্থানের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।
দিয়েছেন।
এবার এই পোস্টের মাধ্যমে আখেরে কী ইঙ্গিত দিলেন কুণাল? একেবারে তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দিদির সঙ্গে থাকার মধ্য়ে যে কৌলিন্য রয়েছে সেটাই কি দলের নবীন নেতাকে বোঝাতে চাইলেন কুণাল? সে তৃণমূল যুবার ঘোষণাই হোক কিংবা দলের একাধিক সন্ধিক্ষণ কুণাল ছিলেন সর্বদা মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের পাশেই। সেটাই কি মনে করিয়ে দিতে চাইছেন পোড় খাওয়া নেতা কুণাল ঘোষ? যে নেতা বইয়ের ভূমিকাটা জানেন না, মাঝখান থেকে পড়া শুরু করেছেন তাঁকেই কি মনে করিয়ে দিলেন কুণাল ঘোষ?
এদিকে সম্প্রতি কুণাল ঘোষ আবার আলাদা দল গড়ে সফলতার নিরিখে একেবারে নেতাজির থেকে এগিয়ে রেখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে।
তিনি লিখেছিলেন, 'নেতাজি দেশনায়ক। আমাদের গর্ব। আমার মতে আজাদ হিন্দ সরকারের কারণে নেতাজিকে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। রাজ্যসভায় আমি নেতাজি মৃত্যুরহস্যের সব ফাইল প্রকাশ্যে আনার দাবিতে সরব ছিলাম। নেতাজি বিশ্বের মানচিত্রের একজন সেরা বিপ্লবী। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম মহানায়ক। সর্বকালের সেরা অন্যতম বাঙালি।
কিন্তু কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে আলাদা দল গড়ে সাফল্যের প্রশ্নে নেতাজি বা আমার পরমশ্রদ্ধেয় প্রণব মুখোপাধ্যায়ের থেকে অনেক এগিয়ে এবং সফল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নেতাজি দল গঠন করেছিলেন, কিন্তু তাঁর পরিচয় সেই দল হয়ে ওঠেনি। তাঁর উত্থান আরেক ভিন্ন স্রোতের নেতৃত্বে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস বাংলার মানুষের আশীর্বাদে রাজ্যে তৃতীয়বার সরকারে, কেন্দ্রে একাধিকবার সরকারে, সারা দেশে রাজনীতিতে ও উন্নয়নের মডেলে এই দলের প্রভাব।'
তবে কি ২০২৬ এর টিকিট নিশ্চিত করতে সোজা রুটে চলছেন কুণাল? প্রশ্নটা অনেকের মনেই উঠছে।