মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনের নির্দেশে গেস্ট হাউসেই আটকে রাখা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলকে। কেন্দ্রীয় সরকারকে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়ে অভিযোগ করেছেন প্রতিনিধিদলের প্রধান আইএএস আধিকারিক অপূর্ব চন্দ্র।
তাঁর অভিযোগ, বাংলায় করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারকে সাহায্য করার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে যে প্রতিনিধিদল পাঠানো হয়েছে, তাঁদের রাজ্য পুলিশের অনুমতি ছাড়া বিএসএফ গেস্ট হাউসের বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
গত ২০ এপ্রিল দিল্লি থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছয় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল (IMCT)। কিন্তু শহরে পা পরে রাজ্য সরকারের তরফে তাঁদের ন্যূনতম পরিকাঠামোগত এবং তথ্য বিষয়ক সাহায্য করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: ৩ মে-র পর লকডাউন বাড়াতে নারাজ মমতা, ভিন্নমত মুখ্যসচিবের
দলের সদস্যদের রাখা হয়েছে বিএসএফের অতিথিশালায়। তাঁদের আরও অভিযোগ, পুলিশের অনুমতি নিয়ে বেরোলেও প্রতিদিন ৬ ঘণ্টার বেশি তাঁদের বাইরে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না।
হিন্দুস্তান টাইমস-কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে জানানো হয়েছে। সব শোনার পরে অসন্তুষ্ট হয়েছেন মন্ত্রী, জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
অপূর্ব চন্দ্রের অভিযোগ, গত পাঁচ দিনে তাঁরা রাজ্যের মাত্র ৩টি হাসপাতাল ও একটি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পরিদর্শন করতে পেরেছেন। তাঁর দাবি, দ্বিতীয় দিন উলুবেড়িয়া থেকে ফেরার পথে কনটেনমেন্ট এলাকা হিসেবে চিহ্নিত সালকিয়ায় পৌঁছতে সক্ষম হয় কেন্দ্রীয় দল
আরও পড়ুন: আপনার সংখ্যালঘু তোষণ প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে, মমতাকে তোপ রাজ্যপালের
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণ রোধ করতে রাজ্য সরকারগুলিকে সাহায্য করার উদ্দেশে বিশেষ কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বাংলা ছাড়াও এমন দল পাঠানো হয়েছে মহারাষ্ট্র, মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাত, তেলাঙ্গনা ও তামিলনাডুতে।
রাজ্যে কেন্দ্রকীয় প্রতিনিধিদলের আগমন নিয়ে গোড়া থেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করে এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।
আরও পড়ুন: 'বাকিদের জীবন বিপন্ন করে একটি সম্প্রদায়ের ভোটের জন্য মুখ্যমন্ত্রী তেল মারছেন'
সাংবাদিক বৈঠকে অবশ্য রাজ্য প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় দলের ঘোরাফেরার উপরে কোনও রকম নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়নি। তাঁদের নির্দেশ মান্য করবেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা, জানিয়েছে রাজ্য সরকার।
আবার রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে পালটা অভিযোগ জানানো হয়েছে যে, সাহায্য করার নামে নির্লজ্জ ভাবে রাজ্যে রাজনৈতিক ভাইরাস ছড়ানোই কেন্দ্রীয় দলের মূল উদ্দেশ্য।