শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দী রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেইসময় থেকে বেহালা পশ্চিমে কার্যত অভিভাবকহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলররা এলাকার মানুষকে পরিষেবা দিয়ে দলের অনুপস্থিত ঢাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে লোকসভা নির্বাচনে এবার সেখানে তৃণমূলের একজন অভিভাবকের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় বেহালা পশ্চিমের নির্বাচনী কাজের দায়িত্ব পেলেন তৃণমূলের আদি নেতা তথা কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর অঞ্জন দাস। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে যাবতীয় দায়িত্ব বুঝে নিয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘লাল জামা পরাটা কে?’, ভরা আদালতে অর্পিতাকে দেখে মুহূর্তের প্রেম–পর্ব পার্থর
অঞ্জন দাসের পরিচয় কী?
অঞ্জন দাস খুব বেশি পরিচিত মুখ না হলেও তিনি তৃণমূলের একেবারে পুরনো সদস্য। দলের সংগঠনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত অঞ্জন একজন দক্ষ নেতা। বেহালারই ভূমিপুত্র অঞ্জন। বহু বছর আগে বেহালা পশ্চিমের ১২৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়ে তিনি কাউন্সিলর হয়েছিলেন। এরপর ২০০০ সালে যখন তৃণমূল কংগ্রেস কলকাতা পুরসভা দখল করেছিল সেই সময় তিনি ১৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। বেহালা পশ্চিম এলাকাটি একেবারে হাতের তালুর মতো চেনা এই তৃণমূল নেতার।
তিনি শুধু নিজেই যে ভোটে লড়েছিলেন তাই নয়, দলের হয়ে বড় বড় ভোটেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী সংহিতা দাস বর্তমানে ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হওয়ার পাশাপাশি ১৪ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন। এই সমস্ত কিছুর ভিত্তিতে নির্বাচনের সময় একজন পুরনো নেতার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাইছেন দলের সুপ্রিমো।
আরও জানা যায, ২০০১ সাল থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় পাঁচ বার বেহালা পশ্চিমে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন। সেই সমস্ত বার মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট হয়েছিলেন অঞ্জন। এছাড়া লোকসভা নির্বাচনে অনেক তৃণমূল প্রার্থীর প্রতিনিধি হয়েছেন। ২০০৪ সালে নির্বাচনের সময় তিনি তৎকালীন তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণা বসুর প্রতিনিধি ছিলেন। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও তিনি তৃণমূল প্রার্থী মমতার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন।
এমনকী মালা রায়, সুব্রত বক্সির প্রার্থী হওয়ার পর পশ্চিম বেহালায় তিনি প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই পার্থর অনুপস্থিতিতে এখন তাঁকেই নির্বাচনী কাজের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ২৩ জুলাই শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি কাণ্ডে পার্থকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এরপর তাঁর মন্ত্রিত্ব যায়। পরে দলের বিভিন্ন পদ থেকে সরিয়ে তাঁকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল।