আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় একটি ভয়েস রেকর্ডিং পোস্ট করলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ। ওই ভয়েস রেকর্ডিং বা অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা। কুণাল বলেন, 'আরজি কর কাণ্ড - তাতে পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে একজনকে গ্রেফতার করেছে। তদন্ত এগোচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যথেষ্ট কড়া পদক্ষেপ করেছেন। বলেও দিয়েছেন যে দরকার হলে অন্য এজেন্সি তদন্ত করুক। ফাঁসি চাই দোষীদের। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যবস্থা নিয়েছেন। তদন্ত ঠিকঠাক এগোচ্ছে। এর মধ্যে অন্য দু'একটি সূত্র থেকে কিছু তথ্য আসছে। একটি টেলিফোন কল - ভয়েস রেকর্ডিং পেয়েছি। তাতেও কিছু আলোচনা এদিক-ওদিক হচ্ছে।'
কুণাল আরও বলেন, 'সেখানে (ভয়েস রেকর্ডিং - যে রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) কিছু প্রবল ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য আছে। এখন সেগুলির আদৌও কোনও ভিত্তি আছে নাকি ভিত্তি নেই, সত্যতা জানা সম্ভব নয়। আমার পক্ষে এখনই আলাদাভাবে সম্ভব নয়। ফলে তদন্তকারীদের কাছে অনুরোধ, তাঁরা নিশ্চয়ই এগুলো হাতে পাচ্ছেন, তদন্তের এই দিকগুলোও নিশ্চিতভাবে খতিয়ে দেখা হোক। যদি অন্য কোনও কারও যোগসূত্রের কোনও নমুনা দেখা যায়, তাহলে সেটা অবশ্যই তদন্তের মধ্যে থাকুক। তদন্তকারীদের উপরে আমার পূর্ণ আস্থা আছে।'
কুণালের সেই বক্তব্য শেষ হওয়ার পরেই তৃণমূল নেতার ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভয়েস রেকর্ডিং (সেটার সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) শোনা যায়। তাতে দু'জনের কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছে। যদিও কলকাতা পুলিশের তরফে কুণালের সেই পোস্টের প্রেক্ষিতে আপাতত কিছু জানানো হয়নি। কুণালের পোস্ট করা ভিডিয়োর অডিয়োয় (সেটার সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) কে কী বলেছেন?
প্রথম কণ্ঠস্বর: কী হয়েছে একটু বল তো আরজিকের ব্যাপারটা?
দ্বিতীয় কণ্ঠস্বর: আরজি করের গোটা মুভমেন্টের পুরোটাই মেকি। ওটা প্রিন্সিপালই চালাচ্ছে। আর প্রিন্সিপালের যারা শাগরেদ, তারাই চালাচ্ছে। আমাদেরকে ইয়ে করছে ….। মুভমেন্টের যে আলাদা কোনও ফেস হবে, অথরিটি যে কোনও স্টেপ নিচ্ছে না বা এরকম আজেবাজে কমেন্ট করছে, সেটার বিরুদ্ধে কিন্তু কিছু নেই। ঠিক আছে।
আমাদের উপর নির্ভর করে বাইরের লোক এত কিছু করছে। অবশ্যই ভালো লাগছে। কিন্তু আমরা নিজেরাই সাসটেনেবল নই। কারণ অধিকারের দাবিতে আন্দোলনকে দমন করার ইতিহাস আছে আরজি কর (হাসপাতালের)। তোমরাও জানো দাদা।
এখানে কালকে একটা ভিডিয়ো এসেছিল যে একজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে অ্যারেস্ট করেছে। ওকে বলির পাঁঠা করা হয়েছে। সেটা সঙ্গে-সঙ্গে আমরা তুলে ধরেছি। কর্তৃপক্ষ চেয়েছিল (পড়ুন ভেবেছিল) যে তাতে আমরা (আন্দোলনের বিষয়টা) ভুলে যাব।
কিন্তু ওরা জানে না যে সেটুকু তো বুদ্ধি আছে যে মানুষ বুঝতে পারবে, ওটা ওর পক্ষে করা সম্ভব কিনা। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দিদির (আরজি কর হাসপাতালে যে ২২ বছরের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করা হয়েছে এবং হত্যা করা হয়েছে) যেরকম ইনজুরি আছে, তাতে একজনের কাজ তো নয় দাদা। দু'জন বা তিনজন (কাজটা করেছে)।
প্রথম কণ্ঠস্বর: কারা হতে পারে? তোরা আরজি করের ছেলেরা কী সন্দেহ করছিস?
দ্বিতীয় কণ্ঠস্বর: আমরা সাসপেক্ট করছি যে (এটা) ইন্টার্নের কাজ। ঠিক আছে দাদা। যে ইন্টার্নের যথেষ্ট পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড আছে। পরিবারের সদস্যরাও যথেষ্ট উচ্চপদস্থ। নাম নিতে পারব না। কারণ আমারই সমস্যা হয়ে যাবে।
প্রথম কণ্ঠস্বর: না, নাম নিতে হবে না। একদন নাম নিতে হবে না।
দ্বিতীয় কণ্ঠস্বর: তাকে প্রোটেকশন দেওয়ার জন্যই....। খারাপ লাগছে ভাবতে যে আমরা ব্যাচমেটই এরকম করতে পারে। আর কলেজ কর্তৃপক্ষ এতটা নির্লজ্জ যে তাকে সেফগার্ড (রক্ষা) করার জন্য এতগুলো গেমস খেলা হচ্ছে। গোটা মুভমেন্টটা আমাদের কলেজ কর্তৃপক্ষ চালাচ্ছে।
যদি খারাপ সময় তোমার পাশে এসে কেউ দাঁড়ায়, একটা মেকি করছে। সে যখন সরে যায় না, সবকিছু ভেঙে পড়ে যায়। সেটাই হবে। কাল বা পরশুর অপেক্ষা শুধু। তো দাদা, একজন ইন্টার্ন হিসেবে আমি সকলের কাছে এটাই আর্জি জানাব যে আমাদের উপরে যেন নির্ভর না করেন।
একজন মহিলা, একজন মা, একজন বোনের উপরে এরকম হয়েছে। সাধারণ মানুষরা আমাদের পাশে দাঁড়ান। অন্যান্য কলেজগুলি যেন আমাদের পাশে থাকে। আরজি করের থেকে কিছু আশা করো না।