যাদবপুরে ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। ৯ অগস্ট হস্টেলের তিনতলার বারান্দা থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল নদিয়ার বাসিন্দা প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রের। ঘটনার দিন কী কী হয়েছিল? তা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ছাত্র মৃত্যুর এই ঘটনা খুন হতে পারে আবার এক্ষেত্রে প্ররোচনাও থাকতে পারে। ঘটনার দিন কী হয়েছিল তা টাইমলাইন ধরে উল্লেখ করা হয়েছে অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্টে।
আরও পড়ুন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা পাকিস্তানি, খালিস্তানিদের বন্ধু, দাবি শুভেন্দুর
নদিয়ার ওই ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যজুড়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। এই ঘটনার পরে ইতিমধ্যেই ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় দেড় মাস পর রিপোর্ট দিয়েছে অভ্যন্তরীণ কমিটি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পরিচয় পর্বের নামে ছাত্রের ওপর ভয়াবহ র্যাগিং করা হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী ওই ছাত্রকে বিকেল ৪টে নাগাদ সাউথ সিটির কাছে একটি চায়ের দোকানে নিয়ে গিয়েছিল। এরপর সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা নাগাদ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ৫৯ নম্বর ঘরে। ওই ঘরে নিয়ে গিয়ে মহিলা পুলিশ কর্মীদের উদ্দেশ্যে অশ্লীল অঙ্গিভঙ্গি করতে বলা হয়। জোর করে এইসব করানো হয়েছিল ওই ছাত্রকে। এরপর তাকে ভয় দেখানো হয়েছিল, পুলিশ এসে তাকে ধরে নিয়ে যাবে। এরপর ১০৪ নম্বর ঘরে নিয়ে গিয়ে ওই ছাত্রকে দিয়ে জোর করে সই করানো হয়েছিল। তারপরেই নগ্ন করে বারান্দায় ছোটানো হয়েছিল। এ সমস্ত বিষয়টি উল্লেখ করা হয় তদন্ত কমিটির রিপোর্টে।
অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রথম বর্ষের ১৫০ জন পড়ুয়াকে নিয়ন্ত্রণ করত এ ২ ব্লকের সিনিয়র দাদারা। শুধু তাই নয়, বাইরের ব্লক থেকে জুনিয়রদের ধরে এনে এ ২ ব্লকে ভয়াবহ র্যাগিং করা হত। বাকি ব্লকগুলিতে হস্টেল সুপারদের নজরদারি থাকলেও প্রাণভয়ে এ ২ ব্লকে প্রবেশ করতে পারতেন না সুপার।
রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, যে সবচেয়ে বেশি র্যাগিং হত এ ২ ব্লকে। এই কমিটি ১৪৪ জনের সঙ্গে কথা বলেছে। তাতে অনেক ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে অভ্যন্তরীণ কমিটি। এর পাশাপাশি এফআইআর করারও সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়েছে অভ্যন্তরীণ কমিটি। এবিষয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, এবিষয়ে আচার্যর পদক্ষেপ করা উচিত। পালটা মদন মিত্র শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘স্কুল পর্যন্ত ঠিক আছে। বিশ্ববিদ্যালয়, আইআইটি এসব ও বোঝে না।’