ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই জেলায় জেলায় প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। একদিকে, এক নাগাড়ে বৃষ্টি আর অন্যদিকে খাল মজে যাওয়ার ফলে জলবন্দি হয়েছে একাধিক এলাকা। লাগাতার বৃষ্টিতে ভাসছে রাস্তা, মাঠ, ঘাট। ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ি। শুধু বৃষ্টির জলেই প্লাবিত হয়েছে একাধিক এলাকা। তাছাড়া, একাধিক নদীর জল ও মারাত্মক হারে বেড়ে গিয়েছে। এদিকে, নদী ভাঙনের ফলে তলিয়ে যাচ্ছে একের পর এক বাড়ি। এখনও বর্ষা শেষ হতে দেরি আছে। তাই এই অবস্থায় বন্যা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিল রাজ্যের সেচ দফতর।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে ফের বন্যার আশঙ্কা, ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা, ফুঁসছে নদী, ছুটি বাতিল
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত অতি বৃষ্টির কারণে ছোট নদী এবং খালগুলি জনমগ্ন হওয়ার ফলে সেগুলিতে পলি জমে যাচ্ছে। যার ফলে পলিতে মজে যাচ্ছে সেগুলি। এই সমস্ত মজে যাওয়া খাল এবং নদীগুলিকে সংস্কার করতে চাইছে রাজ্যের সেচ দফতর। নবান্ন সূত্রে খবর, জেলায় জেলায় যে সমস্ত খাল এবং ছোট নদী গুলি মজে গিয়েছে সেগুলি চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন সেচ দফতরের সচিব প্রভাত মিশ্র। ইতিমধ্যেই তিনি এই মর্মে সব জেলা শাসকদের চিঠি দিয়েছেন।
আধিকারিকদের মতে, জেলাগুলিতে মজে যাওয়া খাল এবং ছোট নদীগুলির জল ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় ফলে ঘন ঘন বন্যা হচ্ছে। এছাড়াও নদী ভাঙনের মতো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এই সমস্ত মজে যাওয়া খাল ও নদী চিহ্নিত করার পর পলি তুলে ফেলে জল ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো হবে। এর ফলে বর্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, বাংলায় ৩৭,৬৬০ বর্গ কিলোমিটার বন্যা প্রবণ এলাকা রয়েছে ১১১টি ব্লকে। রাজ্য সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত কয়েক দশকের মধ্যে বন্যায় বেশ কয়েকবার প্রভাবিত হয়েছে ২০০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা।
সাধারণত বন্যা নিয়ন্ত্রণ যে পদক্ষেপগুলি নেওয়া হয়েছে সেগুলি হল বাঁধ এবং নদী সংস্কারের কাজ, নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি, জলাধারে বন্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা, বহুমুখী জলাধার নির্মাণ ইত্যাদি। ‘জল ধর, জল ভরো’ কর্মসূচির মাধ্যমে জেলায়-জেলায় সরকারি জমিতে লক্ষাধিক পুকুর কাটা হয়েছে। এবার রাজ্য সরকার মজে যাওয়া খাল সংস্কার করবে। এছাড়াও বেশ কিছু ছোট নদী সংস্কার করবে। তার ফলে রাজ্যের বিস্তীর্ণ অংশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার।