পড়াশোনার মান এবং অন্যান্য বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার পর র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে গেল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশনাল র্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক ২০২৪ সালের নানা মাপকাঠিতে রাজ্যের এই দুই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান পিছিয়ে পড়ল। তবে যে মাপকাঠিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৩ সালের তুলনায় পিছিয়ে গিয়েছে, তাতে পয়েন্টের নিরিখে অবশ্য গতবছরের তুলনায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বেড়েছে। আর আশার খবর, দেশের মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতীও পিছিয়ে পড়েছে।
গোটা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবার পাঁচ ধাপ নেমে নবমে পৌঁছে গিয়েছে। এই বিভাগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ১২ থেকে নেমে গিয়েছে ১৮ সংখ্যায়। গত কয়েক বছরের মতোই এবারও প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম একশোর মধ্যে নেই। সার্বিক মাপকাঠি অনুযায়ী, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবার ১৭ সংখ্যায় নেমেছে। ২০২৩ সালে ছিল ১৩–তে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ২৩ থেকে নেমে গিয়েছে ২৬ র্যাঙ্কে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশনাল র্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্কের তালিকায় সার্বিকভাবে প্রথম একশোয় বাংলার ৬টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। যাদবপুর–কলকাতা ছাড়াও আছে আইআইটি খড়গপুর (৬ নম্বরে), আইআইএসইআর (৬১ নম্বরে), ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকাল ইনস্টিটিউট (৭৫ নম্বরে), এনআইটি দুর্গাপুর (৯৩ নম্বরে)। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল—ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ২০২৩ সালে দশমে ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এবার ১২।
আরও পড়ুন: সহকারি সুপার–মেডিসিন বিভাগের প্রধানকে লালবাজারে তলব, খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভি ফুটেজ
২০২৩ সালে প্রথম একশোর তালিকায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল। কিন্তু এবার নেই। এমনকী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে ২০২৩ সালে বিশ্বভারতীও প্রথম ১০০–তে ছিল। এবার তারা ১৫০–তে চলে গিয়েছে। এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে এনআইআরএফ র্যাঙ্কিংয়ে সার্বিক, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্য ক্যাটেগরিতে কলকাতা ও যাদবপুর প্রথম সারিতেই ছিল। কিন্তু ২০২৩ সাল থেকে রাজ্যপাল রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে বারবার নানা খবরদারি করছেন। তার ফলেই রাজ্যের সাহায্যপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির এই অবনমন ঘটেছে।’
এই পিছিয়ে যাওয়া নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্যে। তাই ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ইতিমধ্যেই স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটি গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি, আগামী বছর বাংলার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের হৃতগৌরব ফিরে পাবে।’ আর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এখনকার পরিস্থিতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। তাঁর কথায়, ‘একাধিক বিষয়ে রাজ্য সরকার অসহযোগিতা করছে। রাজ্য–কেন্দ্রের থেকে আর্থিক সাহায্যও প্রায় কিছু নেই। তার তো প্রভাব পড়বে। এই আবহের মধ্যে প্রাদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় কলকাতা চতুর্থ স্থানে আছে। আশা করি, আগামী দিনে আরও এগোব।’