যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে র্যাগিং রোগ কিছুতেই মুছে ফেলা যাচ্ছে না। এই ১৪ মাস আগের কথা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে র্যাগিংয়ের জেরে মৃত্যু হয়েছিল বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের। আর তার জেরে তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল রাজ্য–রাজনীতি। এখনও ওই ঘটনার জন্য একাধিক পড়ুয়া ও প্রাক্তনী জেল খাটছে। তারপরও আবার ওই মৃত ছাত্রটির মতো অবস্থা তাঁরও করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়ে সাহিত্যের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এক্ষেত্রেও ‘থ্রেট কালচার’ লক্ষ্য করা গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মীর ছেলে তথা ছাত্র ওখানের কর্মী আবাসনে থাকেন। দুর্গাপুজোর ছুটির প্রাক্কালে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কয়েকজন সিনিয়র তাঁকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ।
২০২৩ সালের ঘটনা কেউ এখনও ভোলেননি। তবে সেই ঘটনার শাস্তি এখনও হয়নি। সেটা দিতে ব্যর্থ হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই আবহে আবার একজন প্রথম বর্ষের ছাত্রকে মারধর করার অভিযোগ উঠল। থ্রেট করা হল জীবন কেড়ে নেওয়ার। তাও আবার শিক্ষাঙ্গনের অন্দরে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) পক্ষ থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার খামতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে চিঠি দিয়েছে। তার পরই আক্রান্ত হন রসায়ন বিভাগের এক শিক্ষাকর্মীর ছেলে তথা প্রথম বর্ষের ছাত্র। ওই পড়ুয়া যাদবপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। অন্তর্বর্তী উপাচার্য ও তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
আরও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালগুলির নিরাপত্তার খোঁজ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব–স্বাস্থ্যসচিব কালীঘাটে
সাহিত্যের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে আটকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তার জেরে গুরুতর আঘাত লেগেছে বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রের মাথার পিছনে আঘাত লেগেছে বলে অভিযোগ। আক্রান্ত ছাত্রের বক্তব্য, সিভিল ও কেমিক্যালের দুই সিনিয়র ছাড়াও মেন হস্টেলের আরও কয়েকজন মারধরের ঘটনায় জড়িত। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। নতুন পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে মেন হস্টেল থেকে সরিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরের হস্টেলে রাখা হয়েছে। যাদবপুর থানায় ওই আক্রান্ত ছাত্র জানিয়েছেন, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কয়েকজন ছাত্র ক্যাম্পাসের মধ্যেই মাদক সেবন করার জন্য কর্মী আবাসনের বাসিন্দাদের থেকে তোলাবাজি করে টাকা নিতেন।
তবে আক্রান্ত ছাত্রের দাদার মোমোর দোকান আছে চার নম্বর গেটের বাইরে। যেখানে ১ অক্টোবর সন্ধ্যায় তাঁর ভাইকে মারধর করে ফেটসু’র ইউনিয়ন রুমে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় সেই ফুটেজ আছে বলে ছাত্রের দাদার দাবি। আক্রান্ত ছাত্রের অভিযোগ, ‘এখন থ্রেট দেওয়া চলছে। আমার বাবার চাকরি খেয়ে নেবে বলে হুমকি দিচ্ছে ওরা। এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বলেন, ‘দুর্গাপুজোর ছুটিতে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাকর্মী বেশি থাকে না। এখনই পদক্ষেপ করা মুশকিল।’