যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নানা সময়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই র্যাগিংয়ের জেরে ছাত্র মৃত্যু ঘটেছিল বলে অভিযোগ। আবার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে আসেন না রাজ্যপাল তথা আচার্য। উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং ছাত্রছাত্রীরা এখানেই আন্দোলন, প্রতিবাদ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সরগরম করে রাখেন। এবার এই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী এবং অফিসাররা গত ডিসেম্বর মাসের বেতন এবং পেনশনের টাকা এখনও পাননি বলে অভিযোগ। তা রাজ্য সরকার দেয়নি বলেই অভিযোগ উঠেছে।
এই ঘটনার কথা সামনে আসতেই এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে। আর সেই টাকা না পাওয়ার জেরে সম্পূর্ণ বেতন এবং পেনশনের টাকা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে জোগাড় করতে হয়েছে। গতকাল বুধবার এই মারাত্মক অভিযোগ করল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি (জুটা)। তাতেই এখন তেতে উঠেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘এমনিতেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চরম অর্থসঙ্কটের মধ্যে দিয়ে চলছে। তার মধ্যে বকেয়া ন্যায্য টাকা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পাচ্ছে না। এমনকী এবার ডিসেম্বর মাসের বেতন এবং পেনশনের টাকাও বিশ্ববিদ্যালয়কে জোগাড় করতে হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ‘শাওনি–আবু তাহেরের কাছ থেকে আমি কম কীসের?’ আবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন হুমায়ুন কবীর
যদিও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘটনা হওয়ার কথা নয় বলে জানানো হয়েছে। তাহলে কেন এমন হল? কোথাও কি জটিলতা হয়েছে? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই খোঁজ নিতে শুরু করেছে শিক্ষা দফতর। আর খোঁজ নিতেই বেরিয়ে এসেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরই ত্রুটি। এমনই অভিযোগ তুলেছেন উচ্চশিক্ষা দফতরের অফিসাররা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তা মানতে না চাইলেও বিষয়টি নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। আর রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে আগামী দিনে যেন এমন না হয়।
এই গোটা ঘটনা নিয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরের এক সিনিয়র অফিসার জানান, নিয়ম অনুযায়ী বেতন, পেনশনের বিষয়ে রিকুইজিশন দিতে হয়। সেক্ষেত্রে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিসেম্বর মাসের জন্য যে টাকা রিকুইজিশন চাওয়া হয়েছিল সেটাতে ‘অন্যান্য খাতে’ চাওয়া টাকার যথাযথ ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। আর তাই বিষয়টি নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইতিমধ্যেই ব্যাখ্যা চেয়ে উত্তর জেনে নিয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর। সুতরাং কদিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ টাকা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে দেওয়া হবে। আর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘বিষয়টি জানি না। অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখব। এই নিয়ে সমস্যা হবে বলে মনে হয় না।’