গত ৯ অগস্ট যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুকে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যার মধ্যে জামিনে রয়েছে একজন। তবে বাকি ১২ জন এখনও জেলে রয়েছে। সেই সংক্রান্ত মামলা এখন চলছে আদালতে। তবে ধৃতেরা যদি জামিনও পায় সে ক্ষেত্রে নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বা হস্টেলে ঢুকতে পারবে না। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ম সমিতির (ইসি) বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে বিনামূল্যে চিকিৎসা, ব্যবস্থা করল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়
কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেই রিপোর্টে বহু ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্ট নিয়েও এদিন ইসি কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। রিপোর্টে এ ২ ব্লকের ৩৫ জন আবাসিককে বহিষ্কার করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও আরও কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই বৈঠক। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে বৈঠক হয়। শেষ হয় রাত ২ টোয়। তবে শেষ পর্যন্ত আবাসিক পড়ুয়াদের আপত্তিতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, কী ভয়ঙ্করভাবে র্যাগিং করা হত তা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, এ টু ব্লকেই সবচেয়ে বেশি র্যাগিং হত। প্রথম বর্ষের ১৫০ জন পড়ুয়াকে নিয়ন্ত্রণ করত এ ২ ব্লকের সিনিয়র দাদারা। শুধু তাই নয়, বাইরের ব্লক থেকে জুনিয়রদের ধরে এনে এ ২ ব্লকে ভয়াবহ র্যাগিং করা হত। বাকি ব্লকগুলিতে হস্টেল সুপারদের নজরদারি থাকলেও প্রাণভয়ে এ ২ ব্লকে প্রবেশ করতে পারতেন না সুপার। এই কমিটি ১৪৪ জনের সঙ্গে কথা বলেছে। তাতে অনেক ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে অভ্যন্তরীণ কমিটি। এর পাশাপাশি এফআইআর করারও সুপারিশ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ নিয়েও এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ নিজেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেছিলেন। সেখানে রেজিস্ট্রার স্নেহা মঞ্জু বসুর সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়। এরপরেই তিনি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর পরিষ্কার করতে বলেছিলেন। এদিনের বৈঠকে পড়ুয়াদের পঠনপাঠন কীভাবে হবে? তা আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিভাগীয় প্রধানদের জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।