যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীদের একাংশকে নিশানা করে নানা সময় নানা কথা বলেন শাসক-বিরোধী উভয়ই। সেখানে নাকি অতি বামেদের দাপট। সেখানে নাকি দেশ বিরোধী কার্যকলাপে উৎসাহ দেওয়া হয়। তবে পরিসংখ্যান বলছে সেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ই কিন্তু দেশের মুখ উজ্জ্বল করছে। বাংলার মুখ উজ্জ্বল করছে পড়াশোনার নিরিখে।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, সারা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মানের মাপকাঠি কিউএস Ranking-এ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ভালো ফলই করেছে। ২০২৪ সালে বিশ্ব Ranking-এ যাদবপুর ছিল ৭৪১-৭৫০ এর মধ্য়ে। আর এবার সেই যাদবপুর ৭২১-৭৩০ Rank-এর মধ্য়ে উঠে এসেছে। এটা যাদবপুরের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সুনামের বলে মনে করা হচ্ছে।
পরিকাঠামোগত কিছু প্রতিকূলতা রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর সেই প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে নিজের সুনাম অক্ষুন্ন রাখার সবরকম চেষ্টা করেছে যাদবপুর। এটা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। আচমকা যাদবপুর এই জায়গায় উঠে এসেছে সেটা নয়। যাদবপুর বরাবরই বিশ্ব-Ranking এ নিজেদের স্থান ধরে রাখার জন্য লড়াইটা চালিয়ে যায়। ইংরেজি, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, মেটিরিয়াল সায়েন্সের মতো বিষয়গুলিতে বেশ ভালো অবস্থানেই রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
তবে এবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ৭৫১ থেকে ৭৬০ এর মধ্য়ে রয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পিউটার সায়েন্সে আইআইটি খড়্গপুর রয়েছে ৬০ নম্বরে। তবে দেশের মধ্য়ে থাকা রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্য়ে চেন্নাইয়ের আন্না বিশ্ববিদ্যালয় ,পুনে বিশ্ববিদ্যালয় যাদবপুরের থেকে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে।
এদিকে নানা সমস্যায় জর্জরিত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্র সংসদ না থাকার জেরে নানা সমস্যাকে সামনে আনার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা থেকেই যায়। সেই সঙ্গে যাদবপুরের অভ্যন্তরে প্রশাসনিক কিছু সমস্যা রয়েছে। এর ওপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ আউটপোস্ট বসাতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে লালবাজার। মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যাতে আইনশৃঙ্খলা জনিত কোনও সমস্যা না হয় সেটা দেখার জন্য এখানে ২৪ ঘণ্টার জন্য পুলিশ চৌকি করতে চাইছে লালবাজার। সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এনিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয় কি না সেটাও দেখার।
এদিকে গত ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার মিটিংয়ে এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই সময় ছাত্রছাত্রীদের একাংশ তাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এরপরই শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে এক ছাত্র আহত হয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়। সেই আহত ছাত্র গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বর্তমানে তিনি বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। এসবের মধ্য়েই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পুলিশ বসাতে চায় লালবাজার। তবে ছাত্রছাত্রীদের একাংশের মধ্য়ে এনিয়ে তীব্র আপত্তি আছে।