আজ, বৃহস্পতিবার প্রথম বর্ষের নবাগত ছাত্রছাত্রীরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। কিন্তু অতীতের কথা ভোলেনি কেউ। সেই চর্চা আজও ওঠে অনেক ছাত্রছাত্রীর মধ্যে। একবছর আগেই উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন চোখে নিয়ে নদিয়া থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন পড়ুয়া এসেছিলেন। কিন্তু র্যাগিংয়ের জেরে তাঁর প্রাণ চলে গিয়েছিল। এই আবহে এবার নবাগতদের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে এবং পরিবেশ পরিস্থিতি পাল্টেছে এই বার্তা দিতে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য স্বতন্ত্র ছাত্র আবাস তৈরির কাজটা শেষ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা।
আর যাতে ওইরকম ঘটনা না ঘটে তার জন্য আগাম সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ছাত্রটি মারা যাওয়ার পর বাৎসরিক কাজও হয়েছে কদিন আগে। যে ঘটনায় বেশ কয়েকজন ছাত্র এখন জেলে। এই ঘটনাই রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড় করে দিয়েছিল। ইউজিসি’র সুপারিশ ছিল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের পৃথক ছাত্রাবাস করতে হবে। এক বছর আগে এই মেন হস্টেলে র্যাগিংয়ের চরম পরিণতিতে নদিয়া থেকে আসা বাংলা বিভাগের এক ছাত্রের উপর থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল। এই ঘটনাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এখন পৃথক হস্টেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ইশা এখনও অপরিণত’, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে অধীরের পক্ষে সওয়াল ডালুবাবুর
সেদিনের ঘটনা আজও কেউ ভুলতে পারেনি। তবে এখন আর চিন্তা নেই। সিসিটিভি থেকে শুরু করে নিরাপত্তারক্ষী সবই রাখা হয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পৃথক হস্টেলের জন্য। এই বিষয়ে ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায় জানান, ২০২৪ সালে স্নাতক স্তরে ভর্তি হওয়া নবাগত ছাত্রদের ও তাঁদের অভিভাবকদের ভয় পাওয়ার দরকার নেই। রজতবাবু বলেন, ‘ক্যাম্পাসের ভিতরে ওল্ড পিজি এবং নিউ ব্লক হস্টেলেই থাকবে প্রথম বর্ষ। ওল্ড পিজিতে ৯০ জন এবং নিউ ব্লকে ৭০ জন ছাত্রের থাকার ব্যবস্থা আছে। হস্টেলে বিশেষ নিরাপত্তা রাখা হয়েছে। হস্টেলের সুপার এখানেই থাকবেন। কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষক দিগন্ত সাহা প্রথম বর্ষের ছাত্রদের হস্টেলে ওয়ার্ডেনের দায়িত্বে থাকবেন।’
আজ বিজ্ঞান বিভাগের নবাগতরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন। ৫ অগস্ট কলা বিভাগ এবং পরে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্ররা আসবে। এই নবাগত পড়ুয়ারা দু’বছর এক হস্টেলে থাকবেন। ক্যাম্পাসের ভিতরে নিউ বয়েজ হস্টেলে থাকবেন দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা। তৃতীয় বর্ষের নীচের কাউকে যাদবপুর থানার পাশে মেন হস্টেলে রাখা হচ্ছে না। তৃতীয় বর্ষকে মেন হস্টেলের এ–ওয়ান ব্লকে এবং চতুর্থ বর্ষকে এ–টু ব্লকে রাখা হবে। রাজ্য সরকারের দেওয়া সাড়ে পাঁচ কোটি টাকায় মেন হস্টেল সংস্কার হচ্ছে। আর কোনও বিতর্ক, অঘটন চান না যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।