যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে এলেন না আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই সমাবর্তনে রাজ্যপাল আসবেন না সেটা আগেই অনুমান করা হয়েছিল। কারণ এই সমাবর্তন নিয়ে তাঁর আপত্তি আছে সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যথারীতি অনেকক্ষণ অপেক্ষা করা হলেও দেখা মিলল না আচার্য সিভি আনন্দ বোসের। পতাকা উত্তোলন করার সময় থমকে যায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অবশেষে আচার্যের চেয়ার ফাঁকাই রইল। প্রথা মেনে আজ, মঙ্গলবার কোর্ট বৈঠক হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই কোর্ট বৈঠকের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজভবন। তাই রাজভবনের পক্ষ থেকে ফোন আসে বিশ্ববিদ্যালয়ে বলে সূত্রের খবর। যদিও রাজভবনের আপত্তিতে গুরুত্ব না দিয়ে ওপেন এয়ার থিয়েটারে সমাবর্তন শুরু হয়।
এদিকে রাজভবনের সঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংঘাত এখন চরমে উঠেছে। সেটা প্রকাশ্যেও এসেছে। ২০২৩ সালেও সমাবর্তন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। আচার্যকে ছাড়াই সমাবর্তন তখনও হয়েছিল। আর এবার নির্দিষ্ট নিয়ম না মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন হচ্ছে বলে দাবি রাজভবনের। আচার্যের অনুমোদন ছাড়া সমাবর্তনের ডিগ্রি নিয়ে ভবিষ্যতে বিতর্ক তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন গবেষক পড়ুয়ারা। রাজভবন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্যের আচরণ আইন ও বিধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে মন্তব্য করা হয়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোশ্যাল মিডিয়া তে একটি পোস্ট করে এই সমাবর্তন ঘিরে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দেন।
আরও পড়ুন: একসঙ্গে সাতজনের লাশ মিলল বাংলাদেশের জাহাজ থেকে, কেন এমন ঘটনা ঘটল?
অন্যদিকে শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে অনেকক্ষণ বৈঠক হয় আচার্য সিভি আনন্দ বোসের। কারণ কৈফিয়ত তলব করেছিলেন রাজ্যপাল। যদিও তাতে কোনও লাভ হয়নি। তাই আজ অবশেষে আচার্যকে ছাড়াই হল সমাবর্তন অনুষ্ঠান। আচার্য সিভি আনন্দ বোস চিঠিতে দাবি করেন, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হবে শীঘ্রই। তখন তাঁকে সমাবর্তন করার দায়িত্ব দেওয়া হবে। তার আগে এত তাড়াহুড়ো করে সমাবর্তনের কোনও প্রয়োজন নেই। রাজ্যপাল না এলেও তাঁর দূত ডিএন রায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন নিয়ে রাজভবনের অভিযোগ, এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্ট্যাটিউট’ না মেনে তাড়াহুড়ো করে সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়েছে। এই বিষয়টিকে ‘সম্পূর্ণ বেআইনি’ বলে আখ্যা দেন রাজ্যপাল। কিন্তু এসব মানতে রাজি নয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাই হয়ে গেল সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এখন দেখার জল কতদূর গড়ায়।