মতুয়াদের 'ভগবান' শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর এবং শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম নেওয়ায় ‘শপথ নিতে বাধা’ দিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। এমনই অভিযোগ করলেন রাজ্যসভার নয়া সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা দাবি করেছেন যে বুধবার সংসদের উচ্চকক্ষের নয়া সদস্য হিসেবে শপথগ্রহণের সময় 'ঈশ্বর'-র জায়গায় শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর এবং শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম নেন। তখনই তাঁকে থামিয়ে দেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি ধনখড়। শপথবাক্য থেকে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর এবং শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম বাদ দেওয়ার পরেই তাঁকে শপথ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় বলে দাবি করেন মমতাবালা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মমতাবালা দাবি করেছেন যে এই ঘটনার ফল ভুগতে হবে বিজেপিকে। আর সেই ঘটনার জন্য বিজেপিকে বাংলা-বিরোধী বলে আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেকের প্রতিক্রিয়া
বুধবার সন্ধ্যায় অভিষেক বলেন, ‘আজ রাজ্যসভায় মমতাবালা ঠাকুরের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে উনি শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর এবং শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম নিয়েছেন বলে মাঝপথে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন। মানে ভাবতে পারছেন? ঈশ্বর না বলে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর এবং শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম বলেছেন। তাঁরা তো ঈশ্বর। আজ মতুয়া ভাইদের (অপমান করা হল)। তাঁরা অনেক আশা নিয়ে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, '(তাঁরা ভেবেছিলেন যে) তাঁদের ধর্মের প্রসার ঘটবে, তাঁদের যে যে দাবি আছে, সেগুলি বাস্তবায়িত হবে। আপনাদের পূজ্য দেবতা শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর এবং শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরকে তিনি (মমতাবালা) ঈশ্বরের সঙ্গে তুলনা করেছেন বলে মমতাবালার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন জগদীপ ধনখড়। যিনি বর্তমানে দেশের উপ-রাষ্ট্রপতি এবং বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল। মাঝপথেই তাঁর (মমতাবালা) শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান থামিয়ে দেন। এই জগদীপ ধনখড় ধারাবাহিকভাবে বাংলার বিরোধিতা করেছিলেন বলে বড় পদ পেয়েছেন। এই কারণেই আমরা বিজেপিকে বাংলা-বিরোধী বলি।
মমতাবালার মতুয়া চ্যালেঞ্জ
তারইমধ্যে সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে মোদী ও শাহকে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন মমতাবালা। তিনি বলেন, ‘আমি যখন লোকসভায় সাংসদ হিসেবে শপথগ্রহণ করেছিলাম, তখন আমার নিজের ভগবানের নাম নিতে পেরেছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজ যখন রাজ্যসভায় শপথগ্রহণ করলাম, তখন শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর এবং শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম নিতে পারলাম না। আমায় থামিয়ে দেওয়া হয়। নতুন করে আমায় শপথ নিতে হয়। আজ আমার ঠাকুরের নাম বলতে দেওয়া হল না। আমি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীকে করে যাচ্ছি যে এর জবাব আমার মতুয়ারা দেবেন।’