এই বছর প্রবল গরম পড়েছে। সেই গরম থেকে এখনও পুরোপুরি নিস্তার মেলেনি। তখন পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে সচেতন নাগরিকরা গাছ লাগানোর পক্ষে সওয়াল করেন। অথচ জোকা–বিবাদী বাগ মেট্রো রেল সম্প্রসারণ করার জন্য নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই গাছ কাটা বন্ধ করার দাবিতে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। আর তা নিয়ে কলকাতা পুরসভার রিপোর্ট না পেয়ে প্রচণ্ড বিরক্ত হয় কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে কদিন আগে রাজ্য সরকার, সেনাবাহিনী, কেন্দ্রীয় সরকার, রেল বিকাশ নিগম, বন দফতরের পক্ষ থেকে হলফনামা জমা পড়ে।
এই পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কারণ আগের শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্ট এই সব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য তলব করেছিল। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখতেই এমন নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু কলকাতা পুরসভা হলফনামা জমা না দেওয়ায় প্রচণ্ড বিরক্ত হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। তারা আবার এই হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য সময় চাইলে আদালত স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেয়, কলকাতা পুরসভার জন্য অপেক্ষা করবে না আদালত। কারণ রাজ্য সরকার তাদের বক্তব্য জানিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: পদ্মাপারের আম এবার আসছে ভারতে, রফতানি নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ
কিন্তু নির্বিচারে গাছ কাটা কি ঠিক? এই প্রশ্ন যখন সর্বস্তর থেকে উঠতে শুরু করেছে তখন কলকাতা হাইকোর্টের বক্তব্য, আগামী মঙ্গলবার তারা এই মামলা নিয়ে রায় দিতে চায়। মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা—মেট্রো রেলপথ নির্মাণের জন্য ময়দান এলাকায় নির্বিচারে গাছ কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই অভিযোগ তুলে মামলা করেছে ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন ক্যালকাটা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে ওই সংগঠন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড এই কাজ করছে বলে অভিযোগ তুলেছে তারা।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বক্তব্য ঠিক কী? এই গাছ কাটা নিয়ে অনেকেই আপত্তি করে সোচ্চার হন। কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছু হয়নি। আর মামলাকারী সংগঠনের বক্তব্য, এই এলাকাজুড়ে মোট ৭০০ গাছ মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ কাটবে এমন তথ্য সংবাদমাধ্যম থেকে তারা পেয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ২০০ গাছ কাটা হচ্ছে। আর এই বিপুল পরিমাণ গাছ কাটার বিরুদ্ধেই আদালতে যায় এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। প্রথমে এই কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও পরে তা আবার করার অনুমতি দেয় আদালত। আর সব সংস্থার থেকে হলফনামা দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট জানতে চায়, গাছ কাটার বিকল্প কেমন করে পূরণ করা হবে? নানা সংস্থা নিজেদের বক্তব্য জানালেও কলকাতা পুরসভা জানায়নি।