বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ‘বহিরাগত’ তত্ত্বই যে তাদের পরাজয়ের কারণ তা কি মেনে নিল বিজেপি? দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায় সেই প্রশ্নই উঠছে। ইংরাজি বছরের শেষ দিন দিলীপবাবু জানিয়েছেন, জানুয়ারির শুরুতেই কলকাতায় আসছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। তবে পুরভোটের প্রচারে অংশগ্রহণ করবেন না তিনি।
এদিন দিলীপবাবু বলেন, ৯ ও ১০ জানুয়ারি জেপি নড্ডার আসার কথা রয়েছে। নতুন রাজ্য কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হবেন তিনি। তাঁর পৌরহিত্যে নতুন রাজ্য কমিটির প্রথম বৈঠক হবে। তবে পুরভোটের প্রচারে অংশগ্রহণের কোনও পরিকল্পনা নেই তাঁর। তিনি আরও বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে রাজ্য বিজেপি। তবে তাঁদের সফর উত্তর প্রদেশসহ অন্যান্য রাজ্যে ভোট ঘোষণার ওপর নির্ভর করছে।
এখানেই উঠছে প্রশ্ন, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির দিল্লির নেতারা যেখানে পাড়ার গোলমাল সামলাতেও হাজির হয়ে যেতেন, অপ্রাসঙ্গিক করে দিতেন রাজ্যের নেতাদের, সেই বিজেপির সভাপতি রাজ্যে এলেও ভোটপ্রচার করছেন না কেন?
বিশেষজ্ঞদের মত, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ যে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির অন্যতম কারণ তা কার্যত মেনে নিয়েছে বিজেপি। তাই বিধানসভা নির্বাচন মেটার পর থেকে কলকাতার বিমানে আর দেখা মেলে না দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের। কলকাতার পথ ভুলেছেন বছর খানেক আগেও শহরে ঘাঁটি গেড়ে থাকা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। একই অবস্থা অরবিন্দ মেনন, শিবপ্রকাশের মতো নেতার। উপনির্বাচনের প্রচারেও দলের কোনও কেন্দ্রীয় নেতাকে দেখা যায়নি।
রাজনীতির কারবারিদের মতে, পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি অবাঙালি বিজেপি নেতাদের কর্তৃত্ব যে ভালোভাবে নেয়নি তা ভোটের ফলে পরিষ্কার। একমাত্র নরেন্দ্র মোদী বাদ দিলে বাকিদের উপস্থিতি বুমেরাং হয়েছে বিজেপির কাছে। আর ‘বহিরাগত’ তত্ত্ব খাড়া করে ফয়দা লুটেছেন মমতা।
এদিন দিলীপবাবু বলেন, ২০২১ বিজেপি কর্মীদের কাছে শিক্ষার বছর। রাজ্যবাসীকে ইংরাজি নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি।