যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে হস্টেলে র্যাগিংয়ের জেরে এক পড়ুয়ার মৃৃত্যু হয়েছিল, মামলার টাকা তুলতে সেখানেই বৈঠক করল অভিযুক্তরা। কলকাতা হাইকোর্টে মামলা লড়ার জন্য আইনজীবীদের যে টাকা দিতে হবে, সেটা তুলতেই ওই বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছিল। এমনকী হস্টেলের সুপারের নির্দেশকেও তোয়াক্কা করেনি অভিযুক্তরা। বরং বহাল তবিয়তে বৈঠক চালিয়ে যেতে থাকে। শেষপর্যন্ত ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়ের হস্তক্ষেপের পরে বৈঠক বন্ধ করা হয়। আর সেই বিষয়টি নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেই ঘটনার তুমুল নিন্দা করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সমিতি (জুটা)।
ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় শো-কজ করেছে JU
গত বছর অগস্টে র্যাগিংয়ের জেরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছিল। তদন্ত করেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটি। দোষী হিসেবে কয়েকজনকে চিহ্নিত করেছিল। তারপর ২৫ জনের বেশি ‘তথাকথিত ছাত্রকে’ শো-কজ করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছে ১৪ জন।
'এক লাখ টাকা তুলে দে'
আর সেই মামলায় লড়াই করতে আইনজীবীকে যে টাকা দিতে হবে, সেটা তুলতে রবিবার হস্টেলের মাঠে বৈঠক করে অভিযুক্তরা। যে হস্টেলে ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল, সেখানেই বৈঠক করা হয়। সূত্রের খবর, বৈঠকে এ১, এ২, সি এবং ডি ব্লকের প্রায় ৬০ জন পড়ুয়া (স্নাতক স্তরের পড়ুয়া) হাজির ছিলেন। এক আবাসিক ছাত্র দাবি করেছেন, বৈঠকে তাঁদের বলা হয় যে অভিযুক্তদের আইনজীবীদের জন্য ২.৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হচ্ছে। হস্টেল থেকে যেন কমপক্ষে এক লাখ জোগাড় করে দেওয়া হয়, সেই ‘নিদান’ দেয় অভিযুক্তরা।
সুপারকে তোয়াক্কা না করেই বৈঠক
সূত্রের খবর, হস্টেলের সুপারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই বৈঠক চালু করে দেয় অভিযুক্তরা। প্রায় ৩০ মিনিট চলে বৈঠক। ততক্ষণে বিষয়টি ডিন অফ স্টুডেন্টসের কানে যায়। তিনি ফোন করেন এক অভিযুক্তকে। তারপরই বৈঠক বন্ধ করা হয় বলে দাবি করেছেন ডিন অফ স্টুডেন্টস।
আর সেই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় জানান, একজন ছাত্রের মৃত্যু হল। কিন্তু যারা র্যাগিংয়ে যুক্ত ছিল, তাদের শাস্তি দেওয়া যাচ্ছে না। এরকম হলে র্যাগারদের মনে ভয় জন্মাবে না বলে মত সংশ্লিষ্ট মহলের।