একটি আসনেও জয়ের মুখ দেখেনি। কিন্তু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম দুর্গে যে থাবা বসিয়েছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি), তা পরিষ্কার হয়ে গেল এবারের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে।
তিন বছর পর ভোট ঘিরে মূল প্রশ্নটাই ছিল, বাম দুর্গ কি অক্ষত থাকবে নাকি এবিভিপি তাতে চিড় ধরাবে? এদিন ভোটগণনার পর দেখা গেল, কলা ও বিজ্ঞান বিভাগে ছাপ ফেলতে না পারলেও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এসএফআইকে পিছনে ফেলে দুই নম্বরে উঠে এসেছে এবিভিপি। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ পদ দুটিতে ৫০০-র বেশি ভোট পেয়েছে। তবে পাঁচটির মধ্যে পাঁচটি আসনেই বিপুল ব্যবধানে জিতেছে ডিএসএফ।
সাধারণ সম্পাদক পদে ৩,৩২০ ভোট পেয়েছে ডিএসএফ। এবিভিপির ঝুলিতে গিয়েছে ৫২৩ ভোট। ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ পদে ডিএসএফের দখলে এসেছে ৩,৩০৭। এবিভিপি পেয়েছে ৫০৮ ভোট। সহ-সাধারণ সম্পাদক (সল্টলেক) ডিএসএফয়ের ঝুলিতে এসেছে ৬০৫ ভোট। ১৪৭ ভোট পেয়েছে এবিভিপি। সহকারী সাধারণ সম্পাদক (দিবাকালীন) পদেও ডিএসএফের জয়জয়কার। তাদের পক্ষে ২,৩৭৬ ভোট পড়েছে। ৩৭৬ ভোট পেয়েছে এবিভিপি। সবকটি পদেই তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ একেবারেই দাঁত ফোটাতে পারেনি। সবকটি পদে লাস্টবয় হয়েছে।
ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসার পর এবিভিপির জাতীয় সম্পাদক সপ্তর্ষি সরকার বলেন, 'এবারই যাদবপুরে প্রথম লড়লাম আমরা। আমরা রাজ্যের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের ভোট চাই। আমরা জয়ী হব।'
যদিও এবিভিপির উত্থানকে পাত্তা দিতে নারাজ এসএফআই। সিপিআইএমের ছাত্র সংগঠনের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাসের দাবি, এবিভিপিকে বাতিল করে দিয়েছেন পড়ুয়ারা। তাঁর কথায়, 'ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে জয়ীরা যে ভোট পেয়েছেন, তার এক-দশমাংশ ভোটও পায়নি এবিভিপি।'
অন্যদিকে, বিজ্ঞান বিভাগে প্রত্যাশিতভাবেই দাপটে দেখিয়েছে ‘উই দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট’ (ডব্লুটিআই)। ভোটের আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৩১ টি ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ আসনে জিতেছিল তারা। যে আটটি আসনে ভোট হয়, সেখানেও কোনও ছাপ ফেলতে পারেনি।
কেন্দ্রীয় প্যানেলের নির্বাচনে ডব্লুটিআই পেয়েছে ১,০১৩ ভোট। দ্বিতীয় স্থানে পেয়েছে মাত্র ২১৩ ভোট। সবার শেষে রয়েছে টিএমসিপি। মাত্র আটটি ভোট পেয়েছে তারা। সাধারণ সম্পাদক পদে ১,০০১ ভোট পেয়েছে ডব্লুটিআই। এসএফআইয়ের ঝুলিতে এসেছএ মাত্র ২০৬ ভোট। সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে এসএফআই পেয়েছে ৩৬ ভোট। ডব্লুটিআইয়ের ঝুলিতে গিয়েছে ১১২ ভোট। সেখানে অবশ্য কোনও প্রার্থী দেয়নি এবিভিপি।
আপডেট :
১) বিজ্ঞান বিভাগে আটটি আসনেই জয়ী উই দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট। এসএফআইকে হারিয়ে জিতল তারা।
২) ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পাঁচে পাঁচ ডিএসএফের। এসএফআইকে ছাপিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে এবিভিপি। যদিও কোনও আসন পায়নি তারা। তৃতীয় স্থানে রয়েছে এসএফআই। চতুর্থ স্থানে টিএমসিপি।
৩) কলা বিভাগ নিজের দখলে রাখতে সফল এসএফআই।