ধর্নাস্থলে ফিরতেই বেজে উঠল ঢাক। শঙ্খধ্বনি দিলেন আন্দোলনকারীরা। চারদিকে উঠল স্লোগান, জয় আন্দোলনের জয়।
‘৫ দফা দাবি নিয়ে আলোচনার জন্য বলেছিলাম। দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হল। কিছু সদর্থক আলোচনা হয়েছে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে সরাবেন। তাঁর অপসারনের দাবি আমরা প্রথম থেকে করেছিলাম। এটা আন্দোলনের জয়। ডিএমই ও ডিএইচএসকে সরানো হবে। এটা আন্দোলনের জয়। যে ডিসি নর্থ টাকা দিতে চেয়েছিলেন তাকেও সরানো হবে। ৩৮দিন পরে সাধারণ জনগনের আন্দোলনের চাপে নতি স্বীকার করল রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু এরপরেও একটা কথা বলা জরুরী প্রিন্সিপাল হেলথ সেক্রেটারির যে যোগাযোগ, দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, থ্রেট সিন্ডিকেট তার বিষয়ে আলোচনা হলেও সেই আলোচনার আরও অবকাশ রয়েছে। আবার আলোচনা হবে। যতক্ষণ না পর্যন্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে এই অবস্থান, কর্মবিরতি তোলা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। প্রত্যেক কলেজের জুনিয়ররা বসে আলোচনায় বসব তার আগে নয়। ’ বললেন এক জুনিয়র ডাক্তার।
অপর জুনিয়র ডাক্তার বলেন, আমাদের রাজ্য প্রশাসনের কাছে নির্দিষ্ট দাবি ছিল। এই জয় সকলের। তাদের সমর্থন না থাকলে এই জয় ছিনিয়ে আনতে পারতাম না। খুব লজ্জাজনক ডিসি নর্থের প্রসঙ্গে যখন বলি তিনি মাথা নত করতে বাধ্য হন। ডিসি নর্থকে সরানোর কথা বলেছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য সচিবকে কেন সরানো হবে না? কলেজে কলেজে কেন ভয়ের জায়গা? আমরা বলেছি কেন ৯ অগস্টের ঘটনার জন্য কেন গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রয়োজন? তিনি শুধু টাকার কথা বলেছেন। কিন্তু গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রয়োজন। কলেজে কলেজ থ্রেট কালচার কেন? বাস্তবায়িত হোক আমাদের দাবি। কেবলমাত্র লিখিত বা মৌখিকভাবে পেয়েছি। আগে বাস্তবায়িত হোক। তারপর আমাদের সিদ্ধান্ত জানাব।
অপর জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, প্রশাসন কি সাপের পাঁচ পা দেখেছে। বিনম্রতার সঙ্গে বার বার গিয়েছি। আমার বোনের রক্তমাখা চোখ দেখেছি। সেই চোখ জাগবে মশাল হয়ে। আমরা লড়ছি আরও লড়ব। আজ কেবল একটা উইকেট পড়েছে।
অপর এক আন্দোলনকারী বলেন, স্বাস্থ্যভবন পুরো সাফ না হওয়া পর্যন্ত যাব না।
এদিকে জুনিয়র ডাক্তারদের একাধিক দাবি মেনে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার রাত প্রায় ১২ টায় কালীঘাটে নিজের বাসভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান যে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পরে কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের সেই দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেল চারটে পর্যন্ত কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে থাকবেন বিনীত। তারপর নয়া পুলিশ কমিশনার পাবে কলকাতায়। তবে শুধু বিনীত নন, জুনিয়র ডাক্তাররা যাঁদের যাঁদের সরানোর দাবি তুলেছিলেন, তাঁদের প্রায় সকলকে সরিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরানো হয়েছে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (নর্থ) অভিষেক গুপ্তাকেও। শুধুমাত্র রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে নিজের পদে রেখেছেন। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও মন্তব্য করেননি।