আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে টানা ৪২ দিন ধরে কর্মবিরতির পরে আংশিকভাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। নিরাপত্তা সংক্রান্ত সরকারি আশ্বাসের পর পুনরায় কাজে ফেরেন। কিন্তু, কাজের যোগ দেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই আবারও পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এই অবস্থায় আবারও চরম বিপাকে পড়েছেন রোগীরা। চিকিৎসা পরিষেবা না পাওয়ায় খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে রোগীদের। শুধু রোগী দেখায় নয়, রোগীদের রিপোর্ট পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তাররা দেখছেন না বলেই অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায় রোগীরা পরিষেবা না পাওয়ার জন্য পুরোপুরি রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
আরও পড়ুন: ‘আপনাদের পাশে থাকব বলে ইস্তফা দিয়েছি, কাজে ফিরুন,’ জুনিয়র ডাক্তারদের আবেদন জহরের
কর্মবিরতির জেরে কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে রোগীরা ঠিকমতো স্বাস্থ্য পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, এক রোগীর বুকে জল জমে যাওয়া তাঁকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু, সেখানে নিয়ে যাওয়া হলেও তাকে ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। একই অবস্থা অন্যান্য রোগীদেরও। তারাও চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন না। এক মহিলা জানান, ছেলের চিকিৎসার জন্য বেশ কয়েকদিন ধরে তিনি হাসপাতালে ঘুরছেন। কিন্তু, চিকিৎসা পাচ্ছেন না। বলা হচ্ছে ডাক্তার নেই। এই অবস্থায় চিকিৎসকদের উপর ক্ষোভ বাড়ছে রোগী পরিবারের।
জুনিয়র ডাক্তার না থাকায় এখন ওপিডিতে পরিষেবা দিতে হয়েছে সিনিয়র ডাক্তারদের। যদি জুনিয়দের পাশে রয়েছেন সিনিয়ররা। এক জুনিয়র ডাক্তারের বক্তব্য, রোগীদের প্রতি চিকিৎসকদের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে ঠিকই। কিন্তু, পরিকাঠামোগত যে দুর্বলতা সেটা সরকারের। আর সেই দুর্বলতা সরকারকেই সরিয়ে তুলতে হবে। ফলে রোগীরা যে পরিষেবা পাচ্ছেন না, তার জন্য পুরোপুরিভাবে রাজ্য সরকার দায়ী। এর জন্য কোনওভাবেই ডাক্তারদের দায়ী করা যাবে না।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। তাতে রোগী পরিবারের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে পুলিশকর্মীরা। সেই ঘটনায় প্রশ্ন ওঠে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে। তারপরেই কর্মবিরতি শুরু করেন জুনিয়ররা। তাদের বক্তব্য, সরকার নিরপত্তা বাড়ানোর আশ্বাস দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তাই এই কর্মবিরতি।