গতকাল আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই বৈঠকের পর স্বাস্থ্য প্রশাসন এবং কলকাতা পুলিশের একাধিক পদে রদবদলের ঘোষণা করেন মমতা। আর সেই সব ঘোষণার পরই স্বাস্থ্য ভবনের সামনে আন্দোলনকারীদের ধরনামঞ্চে শুরু হয় 'উৎসব'। আন্দোলনকারীদের স্লোগান তুলতে দেখা যায়। অনেককে 'নাচানাচি' করতেও দেখা যায়। যার মধ্যে অনেক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেই 'মিঃ মিসবাহ' এক্স প্ল্যাটফর্মে লেখেন, 'আমার মনে হয়েছিল, তাঁরা অভয়ার বিচার চেয়ে আন্দোলন করছিল। তবে এখন যে মুডে উল্লাস চলছে, তা দেখে খুন হওয়া চিকিৎসকের মা-বাবা হয়ত খুব কষ্ট পাবেন।' (আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে নয়া তথ্য CBI-এর হাতে, চিকিৎসক খুন ১৫ লাখের জন্যে?)
আরও পড়ুন: 'CM-র চিকিৎসক বলে…', মুখ খুললেন 'উত্তরবঙ্গ লবির মাথা' এসপি দাস
আরও পড়ুন: রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ নির্যাতিতাকে 'কয়েকজনের সাথে' পাঁচ তলায় দেখেছিলেন এক নার্স!
সেই পোস্টের নীচে 'সোশ্যিও পলিটিকাল ওয়াচ' নামক এক এক্স ব্যবহারকারী লেখেন, 'তিলোত্তমার ধর্ষকের কি ফাঁসি হয়ে গেল? এদের নাচ দেখে তো তাই মনে হচ্ছে?' এদিকে এই উল্লাসের সপক্ষে কমেন্ট করেন 'স্বষ্টবাদী' নামক এক এক্স ব্যবহারকারী। তিনি লেখেন, 'রাস্তায়, জল- ঝড় এর মধ্যে ৩৭ দিন আন্দোলন করার পর যখন, সরকার তাঁদের দাবি মেনে নেয় তখন এটাই তো স্বাভাবিক। কেন ছাপ্পা ভোট দিয়ে জেতার পর ও তো আপনারা এরকম উল্লাস করেন? ভালো লাগছে না, এটাই স্বাভাবিক।' এদিকে দীপাঞ্জন লেখেন, 'প্রতিবাদ না নাচের আসর বোঝা মুশকিল। এটা আন্দোলন হচ্ছে।' এদিকে 'ইউ স্টাডি' লেখেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের দাবির কাছে নত হওয়ার পরে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল, ডিসি নর্থ এবং দুই শীর্ষ স্বাস্থ্য আধিকারিককে অপসারণ করেছেন। এর পরে জুনিয়র ডাক্তাররা এর জন্যেই উদযাপন করছেন।' এদিকে 'ইলিশ ভাপা' নামক প্রোফালই থেকে লেখা হয়, 'তারা কখনও আন্দোলনই করছিল না, তারা ভোজ করছিল।' এরপর 'রাকিব খান' লেখেন, 'উল্লাস, লজ্জা।' (আরও পড়ুন: মঙ্গল সকালেই ফের 'অ্যাকশন' আরজি কর মামলায়, তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি সহ ৬ জায়গায় ED)
আরও পড়ুন: 'আরজি করে খুনের মামলায় ধামাচাপা দেওয়ার কথা মেনেছেন মমতা',সামনে বিস্ফোরক মন্তব্য
আরও পড়ুন: 'সমঝোতা হয়েছে', মমতা-ডাক্তারদের বৈঠক নিয়ে গভীর রাতে বড় দাবি ঘিরে তোলপাড়
উল্লেখ্য, সোমবার রাত প্রায় ১২ টায় কালীঘাটে নিজের বাসভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদ থেকে বিনীত গোয়েলকে সরিয়ে দেওয়ার যে দাবি জুনিয়র ডাক্তাররা করেছেন, তা মেনে নেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেল চারটে পর্যন্ত কলকাতার পুলিশ কমিশনার পদে থাকবেন বিনীত। তারপর নয়া পুলিশ কমিশনারকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন বিনীত গোয়েল। এদিকে শুধু বিনীত নন, জুনিয়র ডাক্তাররা যাঁদের যাঁদের সরানোর দাবি তুলেছিলেন, তাঁদের প্রায় সকলকে সরিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্বাস্থ্য অধিকর্তা দেবাশিস হালদার এবং স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরানো হয়েছে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (নর্থ) অভিষেক গুপ্তাকেও। তবে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে নিজের পদে রেখেছেন। কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়ের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও মন্তব্য করেননি।