এর আগে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে বৃষ্টি মাথায় নিয়েই অবস্থান বিক্ষোভ জারি রেখেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেই সময় ত্রিপল খাটিয়ে রীতিমতো দুর্গে পরিণত করা হয়েছিল আন্দোলনস্থলকে। পরে যদিও সেখান থেকে ত্রিপল, ফ্যান খুলে নিয়ে গিয়ে আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগ ওঠে। এবার সেই একই অভিযোগ উঠল ধর্মতলায়। গতকালই মিছিল করে ধর্মতলায় গিয়ে আরও তীব্র আন্দোলনের ডাক দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। যদিও কর্মবিরতি তাঁরা প্রত্যাহার করে নেন। তবে এই সবের মাঝেই তাঁদের মঞ্চ ঘিরে তৈরি হয় চরম নাটকীয় পরিস্থিতি। (আরও পড়ুন: একাকিত্বে ভুগছে সঞ্জয়, আরজি কর কাণ্ডে ধৃতকে নিয়ে আদালতে বড় দাবি আইনজীবী কবিতার)
রিপোর্ট অনুযায়ী, ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে ডোরিনা ক্রসিংয়ে আন্দোলনে বসেছেন ডাক্তাররা। এদিকে সেখানে অবস্থান মঞ্চ তৈরির জন্যে যে ডেকোরেটরকে ডাকা হয়েছিল, তারা নাকি সেখানে আসেনি। পরে বৃষ্টি ভেজা রাতে জুনিয়র ডাক্তাররাই ভিজতে ভিজতে মঞ্চ বাঁধেন। ডেকোরেটর বেপাত্তা হওয়ায় নিজেরাই বাঁশ দাঁড় করিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিজেদের 'যুদ্ধক্ষেত্র' তৈরি করেন। গতকাল ধর্মতলা থেকে চিকিৎসকরা স্পষ্ট জানান, সাধারণ মানুষের স্বার্থে কর্মবিরতি তুলে নিচ্ছেন তাঁরা। যদিও যতক্ষণ না বিচার মিলছে, ততক্ষণ তাঁরা আন্দোলন জারি রেখে যাবেন। তবে গতকাল প্রথম থেকেই পুলিশি অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল আন্দোলনরত চিকিৎসককে লাথি মারার অভিযোগ ওঠে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ধর্মতলা চত্বরে। উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা আগে থেকেই শুক্রবারের জন্য কিছু কর্মসূচি স্থির করে রেখেছিলেন। সেই মতো গতকাল বিকেলে তাঁরা এসএসকেএম থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত একটি মিছিল করেন। তারপর ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ছিল তাঁদের। জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে সেই মতো প্রস্তুতি নেওয়া হলেও তাঁদের পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয়। ডাক্তাররা দাবি করেন, তাঁদের আগে থেকেই কর্মসূচির জন্যে অনুমতি নেওয়া আছে। তবে তা নিয়ে শুরু হয় বচসা।
পুলিশের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, জুনিয়র চিকিৎসকদের কেবলমাত্র এই পর্যন্ত মিছিল করে আসার অনুমতি ছিল। তাই আর কোনও কর্মসূচি করা যাবে না। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের এই যুক্তি মানতে অস্বীকার করেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা। এই আবহে কয়েক জন জুনিয়র চিকিৎসক বিক্ষিপ্তভাবে ওয়াই চ্যানেলে বসে পড়েন। পুলিশকর্মীরা তাঁদের সেখান থেকে ওঠানোর জন্য হাত ধরে টানাহ্যাঁচড়া শুরু করে দেন। অন্যদিকে, জুনিয়র চিকিৎসকদের আর একটি দল ওয়াই চ্যানেলে এসে পৌঁছয়। মূলত সাংবাদিক বৈঠকের জন্যই একটি গাড়িতে চাপিয়ে তাঁরা কিছু আসবাবপত্র নিয়ে আসেন সেখানে। পুলিশ সেই গাড়ি আটকে দেয় বলে অভিযোগ। সেই সময়েই মেডিক্যাল কলেজের এক জুনিয়র চিকিৎসককে পুলিশকর্মীরা লাথি মারেন বলে অভিযোগ ওঠে। এমনকী, তাঁদের উদ্দেশে পুলিশ অশালীন মন্তব্য করে বলেও আন্দোলনকারীরা দাবি করেন।