উচ্চ আদালতের প্রশাসনিক দফতরের বিভিন্ন কাজে আগে থেকে অসন্তুষ্ট ছিলেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। এবার সরাসরি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল ও রেজিস্ট্রার জেনারেলর বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হলেন বিচারপতি ভট্টাচার্য। জানা গিয়েছে, নেটওয়ার্ক সমস্যার জন্য একটি ভার্চুয়াল শুনানি করা যাচ্ছিল না। তাই বিচারপতি ভট্টাচার্য স্থগিত রেখেছিলেন একটি মামলার শুনানি। তবে সেই মামলা তাঁকে না জানিয়েই ডিভিশন বেঞ্চে সরিয়ে দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। এতেই ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। বিচারপতির মন্তব্য, 'এই ধরনের ঔদ্ধত্য বিচার ব্যবস্থার পক্ষে স্বাস্থ্যকর নয়। সব মোমবাতি নৈশভোজের টেবিল সাজানোর জন্য তৈরি হয় না, কিছু মোমবাতি প্রতিবাদ মিছিলেও প্রয়োজন হয়।'
করোনা পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্টে শুনানির সমস্ত কাজকর্ম ভার্চুয়ালি হচ্ছে। ১৬ জুলাই একটি মামলার শুনানির সময় নেটওয়ার্ক সমস্যার জন্য থেমে যায় কাজ। অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। এই পরিস্থিতির জন্য তিনি কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং ওই প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটরকে কেন শোকজ করা হবে না তা তাঁদের থেকেই জানতে চান। পাশাপাশি তিনি সাফ জানিয়ে দেন, যতদিন না কলকাতা হাইকোর্টের এই নেটওয়ার্ক সমস্যার সমাধান হবে ততদিন তিনি এজলাসে বসবেন না।
বিচারপতির অভিযোগ, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে বেশিরভাগ সময়ই ভিডিয়োকলের অন্যপ্রান্তে থাকা আইনজীবীদের বক্তব্য বুঝতে পারেন না তিনি। এই সমস্যার কথা আগেই কলকাতা হাইকোর্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে তিনি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুই সুরাহা হয়নি। সেই কারণেই বিরক্ত হয়ে গত ১৬ তারিখ একটি মামলার রায়দান স্থগিত রাখেন। শুনানি স্থগিত রাখলেও জানিয়ে দেন, সোমবার সেই মামলাটি তালিকার সবার উপরে থাকবে। কিন্তু সোমবার মামলার শুনানি করতে গিয়ে দেখেন সেই মামলাটি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে সরিয়ে দিয়েছেন। তা নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য
এই বিষয়ে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য বলেন, 'প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের মাস্টার অফ রোস্টার হতে পারেন। কিন্তু তার এই ধরনের ঔদ্ধত্য ঠিক নয়। প্রধান বিচারপতি মামলাটি অন্য বেঞ্চে দেওয়ার আগে একবার অন্তত জানাতে পারতেন।' বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য আরও জানিয়েছেন, যে মামলাটি তিনি স্থগিত রাখেন, সাধারণত এই ধরনের মামলা ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির জন্য দেওয়া যায় না।