কল্য়াণ বন্দ্যোপাধ্য়ায় বনাম কাঞ্চন মল্লিক। গত লোকসভা নির্বাচনের আগেই এই শব্দ বন্ধটা অনায়াসে ব্যবহার করা যেত। তবে রাজনীতিতে অনেক কিছুই বদলে যায়।
এবার নার্সিংহোমে ৬ লাখ টাকা বিল নিয়ে কার্যত কাঞ্চনের পাশে দাঁড়ালেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি বলেন, এই ব্যাপারে আমি কাঞ্চনের অন্যায় দেখছি না। নার্সিংহোম বিল করেছে। এতে কাঞ্চনের দোষ কোথায়? ডাক্তাররা আন্দোলন করছেন করুন। কিন্তু এত বিল করেন কেন?প্রশ্ন তুলেছেন কল্যাণ।
আসলে কাঞ্চন ও শ্রীময়ী সন্তান জন্মের জন্য একটি নার্সিংহোম ৬ লাখ টাকা বিল করেছিল। সেই বিল নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা কথা বলা হচ্ছে। কেন এইভাবে বিপুল টাকা বিল করেন চিকিৎসকরা, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
এদিকে এসবের মধ্যেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার একটি অনুষ্ঠানে এই বিলের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন গরিবদের জন্য স্বাস্থ্যসাথী। আর তৃণমূল বিধায়কের ৬ লাখ টাকা বিল?
তবে এবার সুকান্তর এই বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন কল্যাণ। তিনি বলেন, সুকান্ত মজুমদার জানেন না বিধায়করা স্বাস্থ্যসাথী পান না? ফচকে ছেলে একটা।
তবে এই বিপুল বিলের প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তর চিকিৎসকদের একাংশও এড়িয়ে যেতে চাইছেন। বার বার তাঁরা আন্দোলনের কথা তুলছেন। কিন্তু এই বিপুল বিল নিয়ে প্রশ্ন করলেই তাঁরা অন্য প্রসঙ্গে চলে যাচ্ছেন। কেন এই বিপুল বিলের বোঝার বিরুদ্ধে চিকিৎসকরা প্রতিবাদ করছেন না সেই প্রশ্নটাও বার বার উঠছে।
এদিকে এই বিল প্রসঙ্গে কাঞ্চনের পাশে দাঁড়িয়েছেন কুণাল ঘোষও। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন, 'কাঞ্চন মল্লিক তাঁর সন্তান হওয়ার বিষয়ে বিধানসভায় মেডিকেল বিল জমা দিয়েছেন বলে ট্রোলিং চলছে। এটা আপত্তিকর। কাঞ্চন কোনো বিল জমা দেননি। কাঞ্চন জনপ্রিয় মুখ। আরও নানা কারণে সম্প্রতি খবরে। সোশ্যাল মিডিয়াতে চর্চার কেন্দ্র। কিন্তু তাই বলে ঘটনা না জেনেবুঝে তাঁকে আক্রমণ, কটাক্ষ চলতে পারে না।
বিধায়করা বিধানসভা থেকে মেডিকেল বিল পান। এটা নিয়ম বহির্ভূত নয়। কাঞ্চন শ্রীময়ীর সন্তানের জন্য ভাগীরথী নেওটিয়া দুলক্ষ টাকা বিল করেছে। ডাঃ প্রণব দাশগুপ্তর টিমের বিল চার লক্ষ টাকা। এই ছলক্ষ টাকার বিল নিয়ে কাঞ্চন বিধানসভায় খোঁজ নিয়েছেন উনি জমা দিতে পারেন কিনা। আলোচনা করেছেন। নিয়ম জেনেছেন। কিন্তু বিল জমা দেননি, রিপিট, বিল জমা দেননি। তার আগেই তিনি বিল জমা দিয়েছেন বলে সমালোচনা শুরু।
এখানে দুটো কথা। এক, যদি ডাক্তারবাবুদের বিল বেশি হয়, তাহলে কাঞ্চন বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কী করবেন? বিধানসভায় এসংক্রান্ত কোনো নিয়ম আছে কি না। দুই, এর আগে ওই হাসপাতাল এবং ওই ডাক্তারটিমের ক্ষেত্রে যদি কোনো বিল জমা পড়ে থাকে, তাহলে বিধানসভা কী করেছিল?
আমার বক্তব্য, আচমকা অত বেশি টাকার বিল পেয়ে বিধায়ক কাঞ্চন যদি বিধানসভায় খোঁজ নিয়ে থাকেন, দোষের নয়। জমা দিলেও দোষ হত না। বিধানসভা স্ক্রুটিনি করতে পারত। নিয়মনীতি অনুযায়ী চলত। কিন্তু কাঞ্চন বিল জমা দেননি, তাতেই এই খবর এবং কাঞ্চনকে সমালোচনায় বিদ্ধ করা অনুচিত। কেন মেডিকেল বিল এত বেশি হবে, আলোচনাটা সেদিকে হওয়াটা জরুরি।'