বামেদের কেরলে 'সার্জিক্যাল স্ট্রাইক' চালাল তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুল শিবিরে যোগ দিলেন কেরলের নিলাম্বুরের নির্দল বিধায়ক পিভি আনবর। যিনি কট্টর বাম-বিরোধী হিসেবে পরিচিত। দিনকয়েক আগেই ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসারের (ডিএফও) অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পিনারাই বিজয়নের পুলিশ। জামিনে মুক্ত হওয়ার পরেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিলেন আনবর। আর তাঁকে স্বাগত জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, 'কেরলের নিলাম্বুরের মাননীয় বিধায়ক পিভি আনবরকে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পরিবারে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাচ্ছি। জনগণের সেবায় এবং কেরলের মানুষের অধিকারের জন্য তিনি নিজেকে নিবেদন করে দিয়েছেন। আর সেই বিষয়টি আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করবে।'
বামেদের সমর্থনে জেতেন আনবর, তবে এখন পুরো বিরোধী!
আনবর এখন তীব্র বাম-বিরোধী হলেও একটা সময় সিপিআইএমের সমর্থনে জিতেছিলেন। ২০১৬ সাল এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নিলাম্বুর আসন থেকে বাম-সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেছিলেন। কিন্তু একাধিক ইস্যুতে সম্প্রতি বামেদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন আনবর। মাসদুয়েক আগে সিপিআইএমের নেতৃত্বাধীন বামেদের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে 'ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট অফ কেরল' (ডিএমকে) তৈরি করেন।
৩ দিন আগেই ইউডিএফের হয়ে সওয়াল করেন
তারপর কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট ইউনাইটেড ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের (ইউডিএফ) সঙ্গে আনবরের ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত মিলেছিল। এমনকী একেবারে নিঃশর্তভাবে বিরোধী জোটকে সমর্থন করেছিলেন। মঙ্গলবার তিনি বলেছিলেন, 'সিপিআইএম এবং মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে উৎখাত করতে হবে। কেরলের মানুষ প্রবলভাবে ইউডিএফের প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় আছেন।'
সম্প্রতি জেলেও যান আনবর
তারইমধ্যে নিলাম্বুরে হাতির হামলায় এক আদিবাসী মানুষের মৃত্যুর ঘটনার জেরে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন আনবর। সেইসময় ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসারের (ডিএফও) অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও পরদিনই জামিন পেয়ে যান। পুলিশের আর্জি খারিজ করে দিয়ে তাঁর জামিনের আর্জি মঞ্জুর করে নিলাম্বুরের আদালত। আর জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার ‘হিরোর’ ধাঁচে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
'বামেদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে কোনও আপস করতে তৈরি'
জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তিনি জানান, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে পিনারাই সরকার যে 'প্রশাসনিক সন্ত্রাস' এবং 'চক্রান্ত' চালাচ্ছে, কংগ্রেস জোটের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে তার বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। বিজয়ন সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে যে কোনও বিষয় নিয়ে আপস করতে রাজি আছেন বলে জানান নিলাম্বুরের বিধায়ক। আর তার কয়েকদিন পরেই যোগ দিলেন তৃণমূলে।