গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় ৮ জন মারা যান। এই বহুতল বিপর্যয়ের জেরে কমিটি গঠন করে কলকাতা পুরসভা। সেই কমিটি গোটা ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট কলকাতা পুরসভার কমিশনার ধবল জৈনের কাছে জমা দেন। আর তার ভিত্তিতেই তিন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করেছিল কলকাতা পুরসভা। এবার তাঁদের সাসপেনশন তুলে নিল কলকাতা পুরসভা। সুতরাং নতুন বছর ২০২৫ সাল থেকে আবার তাঁরা কাজে যোগ দেবেন বলেই সূত্রের খবর। এই নিয়ে এখন কলকাতা পুরসভার অন্দরে জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, বরোর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবাদিত্য পাল, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত ঘোষ এবং সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার শুভম ভট্টাচার্যকে কাজে ফেরানো হচ্ছে। প্রায় ৯ মাসের মাথায় ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ওই তিন ইঞ্জিনিয়ারদের সাসপেনশন তোলা হয়েছে। আর ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে আবার তাঁরা কাজে ফিরতে চলেছেন। এই বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। তারপর কেটে গিয়েছে ৯ মাস সময়। তাহলে কি ওই তিন ইঞ্জিনিয়ার দোষী নন? তাঁরা কি ক্লিনচিট পেলেন? উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: ‘আপনারা রুটে গিয়ে তদন্ত করুন’, রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডিকে ভর্ৎসনা করল আদালত
তদন্তে এই তিনজন ইঞ্জিনিয়ারের কথা উঠে আসে গার্ডেনরিচ বিপর্যয়ের পর। তাই এই তদন্তে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতেই ওই তিন ইঞ্জিনিয়ারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে তাঁরা আর কলকাতা পুরসভায় দেখা দেয়নি। তদন্ত শেষ হয়ে ক্লিনচিট মিললে আবার তাঁরা কাজে যোগদান করতে পারবেন। এমন বার্তাই দেওয়া হয়েছিল কলকাতা পুরসভা থেকে। ২০২৪ সালের ১৭ মার্চ মাঝরাতে গার্ডেনরিচে একটি নির্মীয়মাণ বাড়ি ভেঙে পড়ে। এই ঘটনার তদন্তে উঠে আসে যে, বাড়িটি বেআইনিভাবে তৈরি করা হচ্ছিল। এই ঘটনায় কলকাতা পুরসভা প্রথমে তিনজন বিভিন্ন পদমর্যাদার ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ করে। পরে ওই বছরেরই এপ্রিল মাসে তাঁদের সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়।
এছাড়া গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পর মেয়র ফিরহাদ হাকিম ইঞ্জিনিয়ারদের উপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। সরাসরি বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের তিনি কাঠগড়ায় তোলেন। এরপর কলকাতা পুরসভায় যে রিপোর্ট জমা পড়ে তাতে নিম্নমানের সামগ্রীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ওই রিপোর্টে উঠে এসেছে স্ট্রাকচারাল ডিজাইন ছাড়াই বহুতলটি নির্মাণ করা হয়েছিল। যার জেরে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বলে সূত্রের খবর। এবার অবশেষে ওই তিন ইঞ্জিনিয়ারদের সাসপেনশন তুলে নেওয়ার নির্দেশিকা জারি করেন পুরসভার কমিশনার। আদালতের পক্ষ থেকেও তাঁদের কাজে ফেরানো নিয়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই।