কলকাতা পুরসভা নির্বাচন এখন দোরগোড়ায়। আর ১৪৪টি ওয়ার্ডে অনেক নজরকাড়া ওয়ার্ড রয়েছে। তার মধ্যে একটি ৮৫ নম্বর ওয়ার্ড। এবার সেখানেই দেখা দিল এক অদ্ভূত কাণ্ড। এখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর নাম দেবাশিস কুমার। যিনি এখন বিধায়কও। পোড়খাওয়া এই নেতাকে ওয়ার্ডের প্রতিটি মানুষ ভালো করে চেনেন। এই ওয়ার্ডেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন আর এক ঘরের ছেলে তথা কংগ্রেস নেতা। আর তাঁর পরিবার এই ঘটনায় তাঁকে বাড়িছাড়া করলেন!
এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে তা কেউ আঁচ করতে পারেননি। এই ৮৫ নম্বর ওয়ার্ড একাধিকবার পেয়েছে পুরসভার পরিচ্ছন্নতম ওয়ার্ডের তকমা। সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী জয়দেব ভৌমিককে নিজের পরিবার থেকে শুনতে হল, ‘এত কাজ করেছেন উনি। তার পরেও তুই ওঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিস। এই বাড়িতে ঠাঁই হবে না তোর।’ এখন এই ঘটনা চাউর হয়ে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে এখন লোটা–কম্বল গুটিয়ে পার্টি অফিসে এসে উঠেছেন কংগ্রেস প্রার্থী জয়দেব ভৌমিক। এই ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘থাক বাড়ি। ভোটে আমি লড়বই। পরিবারের কথা আমি শুনব না। কংগ্রেস দলটাকে আমি ভালবাসি।’ ১৭/১ পণ্ডিতিয়া রোডের বাড়ি ছেড়ে আপাতত জয়দেবের ঠিকানা পার্টি অফিস। রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের কংগ্রেস কার্যালয় এখন তিনি স্থান পেয়েছেন। এখানেই দিন কাটাচ্ছেন জয়দেব। এমনকী তাঁকে ছেড়ে ১১ বছরের ছেলেকে নিয়ে স্ত্রীও চলে গিয়েছে শ্বশুরবাড়ি। তবুও নিজের অবস্থানে অনড় তিনি।
জয়দেববাবুর মা–বাবা নেই। ছোট থেকে মামাবাড়িতে মানুষ তিনি। তাঁর মাসিরাই ছোট থেকে তাঁকে মানুষ করেছেন। সেখানে তাঁরা জয়দেবকে কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়াতে নিষেধ করেছিলেন। বলেছিলেন, এই ওয়ার্ডে এত কাজ হয়েছে এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিস না। দেবাশিসবাবুর মতো মানুষ হয় না। কিন্তু জয়দেব সে কথা শোনেননি। তাই তাঁকে বাড়ি ছেড়ে দিতে বলা হয়। এই ঘটনার কথা শুনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাশিস কুমার বলেন, ‘বিষয়টা আমি শুনেছি। ওঁর কোনও অসুবিধে হলে আমি পাশে দাঁড়াব।’