এবার কলকাতা পুরসভার সঙ্গে টক্কর লাগল সিএবি’র। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তবে ঘটেছে। কারণ সিএবি বাকি রেখেছে প্রায় আট কোটি টাকা! আর তা পেতে এবার কলকাতা পুরসভা কড়া চিঠি দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনীতি বনাম ক্রিকেটের মাঠ। কলকাতা পুরসভার অভিযোগ, সিএবি টানা প্রায় ১৮ বছর বিনোদন কর বাবদ নয়া–পয়সা ঠেকাচ্ছে না। কোনও টাকা দিচ্ছে না ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল। সিএবি’র সভাপতি এখন স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। যাঁর দাদা প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সৌরভের সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সম্পর্ক অত্যন্ত ভাল। সেখানে এমন ঘটনা বেশ চাপ তৈরি করল।
সিএবি বছর বছর বিনোদন কর বকেয়া রেখেছে। আর তা বাড়তে থাকার জেরে এই বিপুল টাকার অঙ্কে এসে দাঁড়িয়েছে। বিনোদন কর নেওয়া কলকাতা পুরসভার আইনের মধ্যে পড়ে। বিনোদন কর আদায় করে তা উন্নয়নের কাজে লাগানো হয়। এই কর আদায় করতে গত নভেম্বর মাস থেকে বারবার সিএবিকে চিঠি দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। এমনকী এই বকেয়া বিপুল টাকার কর নিয়ে বৈঠক চেয়েও তিনদিন আগে আবার সিএবিকে চিঠি দেয় কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ। ওই চিঠির পর মঙ্গলবার পুরসভার কমিশনারের সঙ্গে সিএবি কর্তৃপক্ষের একটি বৈঠকও হয়। কিন্তু কোনও রফাসূত্র বেরিয়ে আসেনি।
আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রী থাকলে আমি যাব না’, তথ্য কমিশনার নিয়োগ বৈঠকে থাকবেন না বলে চিঠি শুভেন্দুর
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচের টিকিট বিক্রি করে সিএবি। সেই টিকিটের উপর নির্দিষ্ট হারে বিনোদন কর নেয় কলকাতা পুরসভা। পুরসভার আইন অনুযায়ী তা নেওয়ার কথা আছে। নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেক ম্যাচে আসন পিছু ১৫ টাকা করে বিনোদন কর ধার্য করা হয়। সেই হিসাব ধরলে ইডেনে একটি একদিনের ম্যাচে ৬৫ হাজার আসনের জন্য বিনোদন কর বাবদ ৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা কলকাতা পুরসভার পাওয়ার কথা। কোনও ম্যাচের যত টিকিট বিক্রি হয় সেটার ভিত্তিতেই করের পরিমাণ চূড়ান্ত হয়। এই টাকা সিএবির দিয়ে দেওয়ার কথা। সেখানে আইপিএলের যে খেলা হয় সেটার বিনোদন কর দেয় কেকেআর। ২০০৭ সাল থেকে সিএবি বিনোদন কর দিচ্ছে না।
এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুরসভা বনাম সিএবি বিস্তর চাপানউতোর চলছে। কলকাতা পুরসভা প্রত্যেক বছর নিয়ম করে বিনোদন করের টাকা চেয়ে সিএবিকে ‘ডিমান্ড’ পাঠিয়েছে। কিন্তু এক টাকাও আসেনি। এই বিষয়ে সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘কলকাতা পুরসভা আমাদের ডেকেছিল। পুরসভাকে জানিয়েছি, এই কর দেওয়ার কথা নয় আমাদের। ২০০৭ সাল থেকে এটাই চলে আসছে। এবার দেখা যাক কী হয়।’ যদিও কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, কলকাতা পুরসভার চিঠি পাঠানোর পর মঙ্গলবার এই বকেয়া নিয়েই পুরসভার কমিশনারের সঙ্গে সিএবির দুই শীর্ষকর্তার বৈঠক হয়েছে পুরভবনে। এখন দেখার জল কোন দিকে গড়ায়।