মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগে হকারদের জায়গা দখল করা নিয়ে নবান্ন থেকে সোচ্চার হন। তারপর থেকেই কলকাতা পুরসভা রাস্তায় নেমে দেদার হকার উচ্ছেদ করতে শুরু করে। বিশেষ করে যাঁরা বেআইনিভাবে বসেছিলেন। এই ঘটনার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে হকার সমীক্ষা শুরু করে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, এই কাজে না গিয়ে অন্যত্র সময় কাটিয়েছেন কলকাতা পুরসভার একাধিক কর্মী। তার জেরে শোকজের মুখে পড়েছেন তাঁরা। কলকাতা শহরের ফুটপাথ থেকে দখলদার মুক্ত করতে একটি কমিটি গড়া হয়। তারপরই মহানগরীর ফুটপাথে হকারদের নিয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়।
কলকাতা পুরসভা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়, কেএমসি’র ১৬টি বোরো কমিটির হয়ে মোট ১১২টি দল সমীক্ষার কাজ করবে। প্রত্যেকটি দলে ৬জন করে কর্মী থাকবেন। সব মিলিয়ে ৬৭২ জন কর্মীকে দিয়ে এই কাজ করানো হবে। এরপর কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছে যে, হকার সমীক্ষার কাজে নেমেছেন ৫৬০ জন কর্মী। পরে খোঁজ নিয়ে পুরসভার অফিসাররা জানতে পারেন, সমীক্ষার দায়িত্বে থাকা ৫০ জন কাজে যোগ না দিয়ে অন্যত্র সময় কাটিয়েছেন। তাঁরা কেউ সমীক্ষার কাজ করার জন্য প্রশিক্ষণ নিতে পর্যন্ত আসেননি বলে সূত্রের খবর। এই খবর জানাজানি হতেই শোকজ করা হয় তাঁদের।
আরও পড়ুন: দিদি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ছায়াসঙ্গী বোন রেহানা, বরাবরের মতো এবারও নিলেন ঝুঁকি
এই শোকজের চিঠি ধরানোর পাশাপাশি তাঁদের আর কাজে নেওয়া হয়নি। পরিবর্তে নতুন করে ৩০ জন কলকাতা পুরসভার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে হকার সমীক্ষার কাজে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতা পুরসভার এক অফিসার জানান, সমীক্ষার কাজে যোগ না দেওয়ায় একটা বড় অংশের কর্মীকে শোকজ করা হয়েছিল। তাঁদের অনেকেই শোকজের জবাবও দিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের সেই জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেননি পুরসভার অফিসাররা। তাই আর কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হবে কিনা ওই কর্মীদের বিরুদ্ধে সেটা এখনও জানা যায়নি। এখন কলকাতা পুরসভার একমাত্র লক্ষ্য, দ্রুত হকার সমীক্ষার কাজ শেষ করা। আর সেই রিপোর্ট নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে জমা করা।
শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা সর্বত্র হকার সমস্যা রয়েছে। তাই সেখানে নেমে অনেককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। তার জন্য চাই হকার সমীক্ষার কাজ। সেখানেই ফাঁকি ধরা পড়েছে। গত ৩১ জুলাই বেহালার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে হকার সমীক্ষার কাজ করতে গিয়ে এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতার হাতে প্রহৃত হন কলকাতা পুরসভার এক অফিসার। কলকাতা পুরসভার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই নেতাকে গ্রেফতার করেছে পর্ণশ্রী থানার পুলিশ। তবে তার সঙ্গে ফাঁকি দেওয়ার ঘটনার কোনও সম্পর্ক নেই। যদিও ওই ঘটনার পর থেকে সমীক্ষার কাজ করা নিয়ে খানিকটা আতহ্কিত পুরসভার কর্মীরা।