রাসবিহারী থেকে চেতলা যাওয়ার পথে বা বেহালা থেকে রাসবিহারী মোড় আসার পথে অনেকেই দেখেছেন চেতলা এলাকায় মানুষের সাহায্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে মেয়র’স ক্লিনিক। যেখানে সাধারণ গরিব মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পেয়ে থাকেন। এবার ওই এলাকাতেই দেখতে পাওয়া যাবে মেয়র’স স্কুল। যে বিদ্যালয়ের বাইরের দেওয়াল জুড়ে সহজপাঠের চালচিত্র রয়েছে। আছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি। বিদ্যালয় ভবনটি পুরোটা কাচে ঢাকা। ক্লাসরুমে ডিজিটাল বোর্ড থেকে শুরু করে এলইডি টিভি, প্রশস্ত হল ঘর, বাতানুকূল ব্যবস্থাপনা রীতিমতো বেসরকারি স্কুলকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। এটাই চেতলার বুকে গড়ে ওঠা ‘মেয়র’স স্কুল’।
কলকাতা পুরসভার পুরনো একটি স্কুল ছিল এখানে। যেখানে কিছু পড়ুয়া পড়ত ঠিকই সেভাবে আগ্রহ গড়ে উঠত না। এখন সেটি সংস্কার করে ‘মেয়র’স স্কুল’ করা হয়েছে। যে বিদ্যালয়ে পড়ুয়ারা একটু স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। আগ্রহ বাড়বে লেখাপড়ায়। গতকাল, শুক্রবার এই নবনির্মিত এই ‘মডেল’ স্কুলের উদ্বোধন করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুরসভার শিক্ষা বিভাগের মেয়র পারিষদ সন্দীপন সাহাও। চেতলার পরমহংসদেব রোডে ওই স্কুলটি ছিল জরাজীর্ণ। এবার সেটাকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। যেখানে স্থান পেয়েছে পড়ুয়াদের নয়া ডেস্ক, দেওয়ালে প্রকৃতির ছবি, গ্রাফিতি, সৌরজগতের চিত্র এবং বড় হরফে ক্লাসের দেওয়ালে আঁকা ছবি।
আরও পড়ুন: বেলঘরিয়ায় ভরসন্ধ্যায় স্ত্রীর গায়ে আগুন দিল স্বামী, কেরোসিন ঢেলে হাড়হিম ঘটনা ঘটাল
এখানে শিশুদের পড়তে ভাল লাগবে। স্থানীয় শিশুরা ছাত্রজীবন শুরু করবে একটা ভাল পরিবেশে। চিন্তা ও কল্পনাশক্তি বাড়বে। বেড়ে উঠবে শিক্ষার আলোয়। এইসব কথা ভেবে এই আধুনিক ক্লাসরুম থেকে শুরু করে শিশু মনে ছাপ ফেলার মতো পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে। এই বিষয়ে মেয়র পারিষদ সন্দীপন সাহা বলেন, ‘মেয়র’স স্কুল কলকাতা পুরসভার মডেল স্কুলগুলির মধ্যে একটি। মেয়র চান বেসরকারি স্কুলের শিশুদের মতো পড়ার পরিবেশ পাওয়া উচিত পুরসভার স্কুলের পড়ুয়াদেরও। তাই পুরসভার স্কুলগুলিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। যাতে নিম্ন আয়ের পরিবারের শিশুরাও ভাল মানের শিক্ষা–পরিকাঠামো পায়।’
এখানে শিশুদের পুরোপুরি গড়ে তোলার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যাতে বই পড়ার অভ্যাস তৈরি হয়। হাতেকলমে সব কিছু শিখতে পারে। তারপর বেড়ে উঠে বড় স্কুলে যাবে এই পড়ুয়ারা। এই মেয়র’স স্কুলে রয়েছে ল্যাবরেটরি। যেখানে হাতেকলমে পড়ুয়ারা সব শিখতে পারবে। এখানে আছে ‘গল্প ঘর’। যেটা লাইব্রেরি। এখানে পড়ুয়ারা নানারকম বই পড়তে পারবে। থাকবে কমিকসের বইও। মিড–ডে মিলের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হযেছে। তাই আলাদা শেড করা হয়েছে। এই শেডের তলায় ২৫টি শিশু একসঙ্গে বসে খেতে পারবে। এই স্কুল প্রাঙ্গণে আছে পার্ক। যা সাজিয়ে তোলা হয়েছে দোলনা, স্লিপ এবং নানা খেলনা দিয়ে। দেওয়ালে আঁকা আছে নানা ধরনের কার্টুনও।