শহরের বহুতল আবাসনগুলিতে মশাবাহিত রোগ বেশি ছড়ায় বলে অভিযোগ। আর তাই ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি দেখা যায়। এই মশা দমন করার কাজ করতে এবার উদ্যোগ নিল কলকাতা পুরসভা। আবাসনগুলির সহযোগিতা চেয়ে চিঠি লিখলেন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ। কলকাতার ২২০০ আবাসনের মধ্যে ৯৭২টি আবাসনে এই চিঠি ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আবাসন মশা মুক্ত করার আবেদন জানানো হয়েছে চিঠিতে। শহরে ডেঙ্গি প্রতিরোধে এমন পদক্ষেপ এই প্রথম। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
এদিকে এই বছর এখনও পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গি উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে পৌঁছয়নি। কিন্তু বেড়ে গিয়েছে ম্যালেরিয়া। বেহালার সখেরবাজারে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ২৮ জুলাই তারিখের পাওয়া হিসেবে, ডেঙ্গিতে এখন আক্রান্ত ২০৪। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০৯৩। শহরে লাগাতার বৃষ্টি চলছে। এখন ডেঙ্গির প্রকোপ বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি। এই বিষয়ে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, ‘বেশি ডেঙ্গি হচ্ছে বড় বড় আবাসন, হাউজিং কমপ্লেক্সে। তাই আবাসনগুলিকে আমরা নজরদারির আওতায় আনছি। ১৭০০ আবাসনের মতো নাম পেয়েছি কমিটির। রোজ যাচ্ছে চিঠি। কলকাতা পুরসভার কর্মীরা যাবেন হাউজিং কমিটিগুলিতে।’
আরও পড়ুন: সিসি ক্যামেরা–ট্র্যাফিক সিগন্যাল নিয়ে বাড়তি উদ্যোগ লালবাজারের, দুর্গাপুজো নিয়ে সিদ্ধান্ত
অন্যদিকে কলকাতা পুরসভার কর্মীরা হাউজিং কমিটিগুলিতে গিয়ে কোথাও অব্যবস্থা দেখলে সেখানকার বাসিন্দাদের সতর্ক করবেন। প্রত্যেক ওয়ার্ডে এই সতর্ক করার কাজ চলবে। এমনকী কোথাও অব্যবস্থা দেখলে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে রিপোর্ট ফাইল করবেন পুরকর্মীরা। প্রথমে ৪৯৬ ধারার নোটিশ ধরানো হবে অভিযুক্তকে। তাতে কাজ না হলে যে ব্যক্তির নামে রিপোর্ট ফাইল করা হবে, তাকে মিউনিসিপ্যাল কোর্টে তোলা হবে বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। আবাসনগুলির ছাদে জল জমে ডেঙ্গির লার্ভার বংশবৃদ্ধির অভিযোগ আসে। অতীন ঘোষের বক্তব্য, ‘কেউ নিয়ম না মানলে তাদের নোটিশ ধরানো হবে। মিউনিসিপ্যাল কোর্টে মামলা হবে। মোটা টাকা ফাইন করা হবে। ২০২৩–২৪ অর্থবর্ষে ২১ লক্ষ টাকা ফাইন করা হয়েছে।’
এছাড়া ২০২৩ সালে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৩৮। এই সংখ্যা যাতে কমিয়ে আনা যায় তার জন্য আগামী ৮ অগস্ট বৈঠকে বসছে কলকাতা পুরসভা। প্রত্যেক বছর ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া সংক্রান্ত সচেতনতা প্রচার ও অভিযানে যায় কলকাতা পুরসভা। কিন্তু এই কাজে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হয় স্বাস্থ্যকর্মীদের বলে অভিযোগ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁদের আবাসনে ঢুকতে দেওয়া হয় না। তার জেরে বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বহুতল আবাসনের আবাসিকরাই মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। সেটা ঠেকাতেই এই উদ্যোগ।