কলকাতা পুরসভার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে ল্যাম্প পোস্ট খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। তা সারানোও হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তার ফলে সন্ধ্যে নামলেই ওই জায়গা অন্ধকারে ডুবে যায়। আর বর্ষাকালে ওই খারাপ ল্যাম্প পোস্ট থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। বর্ষাকাল আসার আগেই এবার সতর্ক পদক্ষেপ করল কলকাতা পুরসভা। এবার থেকে কোনও ওয়ার্ডে ল্যাম্প পোস্ট খারাপ থাকলে অথবা মেরামত না হয়ে পড়ে থাকলে কাউন্সিলরদের তা সরাসরি মেয়রকে জানাতে হবে। এবার এমনই নির্দেশ দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
২০২২ সালের ঘটনা। বেহালার হরিদেবপুরে জলমগ্ন রাস্তা পেরিয়ে যাওয়ার সময় ল্যাম্প পোস্টের তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক স্কুলপড়ুয়ার। এরকম ঘটনা আরও নানা জায়গায় ঘটেছে। তাই মেরামত না হয়ে পড়ে থাকা এবং খারাপ ল্যাম্প পোস্ট নিয়ে সরাসরি তাঁকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মেয়র এবার কাউন্সিলরদের বলেছেন, বাংলায় বর্ষা আসার আগেই যেন শহরের প্রত্যেকটি ল্যাম্প পোস্ট মেরামত করে ফেলা হয়। ফিরহাদ হাকিম কাউন্সিলারদের বলেছেন, ‘আপনাদের কারও ওয়ার্ডে কোথাও ল্যাম্প পোস্ট খারাপ থাকলে সরাসরি আমাকে জানান। যা করার করব।’
আরও পড়ুন: শৈলেন মান্না সরণির রাস্তা খারাপ, কেন মেরামত করা হয়নি? জেলাশাসককে ধমক মুখ্যমন্ত্রীর
এখন শহরের বুকে এলইডি এবং হাইমাস্ট আলো লাগানো হচ্ছে। সেখানে কোনও খারাপ বা মেরামত না হওয়া ল্যাম্প পোস্ট থাকলে সেখানে এখন নতুন করে এলইডি আলো লাগিয়ে দেওয়া হবে। তাতে দুটো কাজ একসঙ্গে হবে। এক, খারাপ ল্যাম্প পোস্ট আর থাকবে না। দুই, নতুন আলোয় কেটে যাবে আঁধার। বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনা আর ঘটবে না। এবার পুরসভার অধিবেশনে ১৩ নম্বর বরোর চেয়ারপার্সন এবং ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রত্না শূর জানান, তাঁর বরোর একাধিক ওয়ার্ডে ল্যাম্প পোস্ট রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে না। ফলে বিপদের ঝুঁকি রয়েছে। তিন বছর আগে তাঁর ওয়ার্ডেই স্কুলপড়ুয়ার মর্মান্তিক পরিণতি ঘটেছিল।
এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার আলো বিভাগের মেয়র পারিষদ সন্দীপরঞ্জন বক্সি ওই কাউন্সিলরকে বলেছিলেন, ‘আপনার এলাকা খতিয়ে দেখে আমরা সদর্থক ভূমিকা নেব।’ তারপরই মেয়র কাউন্সিলরদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘ওয়ার্ডে আলো রক্ষণাবেক্ষণ না হলে মেয়র পারিষদকে তালিকা জমা দিন। আর কোনও ওয়ার্ডে ল্যাম্প পোস্ট নিয়ে কোনও সমস্যা থাকলে আপনারা সরাসরি আমাকে জানান। আমি ব্যবস্থা নেব।’ এই ঘটনার পর পুরসভার কমিশনার ধবল জৈন একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, এখন থেকে কলকাতা পুরসভার আলো বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং সাব–অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারদের প্রত্যেক ওয়ার্ডে ঘুরে দেখতে হবে, ল্যাম্প পোস্ট ঠিক আছে কিনা। আলো জ্বলছে কিনা। প্রত্যেক সপ্তাহে রিপোর্ট দিতে হবে।