পুরবোর্ড গঠনের পর একবছর পূর্ণ হয়েছে মঙ্গলবার। এই আবহে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানালেন, দু’টি কাজ এখনও করতে পারেনি কলকাতা পুরসভা। গতকাল এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ফিরহাদ বলেন, 'হোর্ডিং নীতি কার্যকর করতে পারেনি পুরসভা। তাছাড়া হকারদের প্লাস্টিকের ছাউনির ব্যবহার বন্ধ করতেও ব্যর্থ হয়েছে পুরসভা।' উল্লখ্য, ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম। বোর্ডও গঠন হয়েছিল সেদিনই। এবার বর্ষপূর্তিতে পুরসভার রিপোর্ট কার্ড তুলে ধরলেন ফিরহাদ। মেয়র জানান, এখনও প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে সাফল্য পায়নি পুরসভা।
নতুন বোর্ড গঠনের পরেই ‘টক টু মেয়র’ পরিষেবা শুরু হয়েছিল। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, এই কর্মসূচির অধীনে মোট ৬৪৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। পুরসভা দাবি করেছে, জমা পড়া অভিযোগের ৮০ শতাংশের নিষ্পত্তি হয়েছে। এদিকে ‘হোয়াটসঅ্যাপ টু মেয়র’ পরিষেবায় ২৪৫৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তার মধ্যে ৭০ শতাংশ সমস্যার সমাধানসূত্র বেরিয়ে এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে। তাছাড়া নিকাশি, পানীয় জল সরবরাহ, জঞ্জার সরানোর মতো কোন কোন নাগরিক পরিষেবা ভালোভাবে পুরসভা প্রদান করতে পেরেছে, তাও তুলে ধরেন মেয়র।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রচারের সময় থেকেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায় শোনা যেত 'রিপোর্ট কার্ডে'র কথা। এই আবহে মেয়র হয়ে ফিরহাদ জানিয়েছিলেন, একবছর পরপর পুরসভার কাজের খতিয়ান তিনি তুলে ধরবেন জনসাধারণের কাছে। ফিরহাদ ব্যর্থতার খতিয়ান দিতে গিয়ে বলেন, 'কোন রাস্তায় কত হোর্ডিং থাকবে, তা নিয়ে হোর্ডিং নীতি তৈরি করতে পারিনি। ফলে বড় রাস্তায় বড় বড় হোর্ডিং রয়ে গিয়েছে।' এদিকে হকারদের প্লাস্টিক ছাউনি প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, 'প্লাস্টিকের পরিবর্তে ওঁদের টিনের ছাউনি দিতে বলেছিলাম। ওঁরা শোনেননি। পুলিশ কমিশনারের কাছেও আবেদন করেছিলাম। প্লাস্টিক ব্যবহারের ফলে গড়িয়াহাটের মতো বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে।'
এদিকে প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নেন মেয়র। তিনি দাবি জানান, এই ক্ষেত্রে পুলিশকে জরিমানা সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হোক। বাজার বা দোকানে প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ে ফিরহাদ বলেন, 'রাজ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে আবেদন, এইজরিমানা সংগ্রহে পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। পুরসভার অনেক কাজ আছে। নিয়মিত অভিযান চালানো তাদের পক্ষে মুশকিল। জরিমানা নেওয়ার বিষয়টি পুলিশ ভালো ভাবে সামলাতে পারে।'