ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে যে সংশোধনী বিল আনা হচ্ছে তাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় হচ্ছে সংসদ। জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটির (জিপিসি) বৈঠক বয়কটের ডাক দিয়েছে ইন্ডিয়া জোট। তার উপর এই নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বনাম তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বচসা চরমে উঠেছিল। তার পর কাচের বোতল ভেঙে হাতে সেলাই পড়ে। এই আবহের মধ্যেই ওয়াকফ নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। যা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে।
আজ কলকাতা পুরসভায় বসে মেয়র আশঙ্কা করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘনিষ্ঠ কোনও শিল্পপতি কিংবা ব্যবসায়ীর নজরে হয়তো কোনও ওয়াকফ সম্পত্তি আছে। সেই সম্পত্তি এখন তাঁদের কাছেই বিক্রি করতে চাইছে মোদী সরকার। তাই নানারকম ফন্দি আঁটা হচ্ছে। এমনকী এই কারণে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করতে চাইছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘মোদী জমানায় ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষের কোনও উন্নতি না হলেও, কেন্দ্রীয় সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের উন্নতি হয়েছে। আর তাঁদের মধ্যেই কারও নজরে হয়তো কোনও বিশেষ ওয়াকফ সম্পত্তি রয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে এসে এপারে হাতসাফাই করত ব্যক্তি, চুরির জন্য ভাড়া নেয় ফ্ল্যাট, গ্রেফতার
ইতিমধ্যেই ওয়াকফ নিয়ে তৈরি হওয়া জেপিসি’র চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পালের ভিন রাজ্যে সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ ৩১ জন সদস্য কমিটিতে আছে। তাহলে পাঁচজনকে নিয়ে এমন সফর হবে কেন? এমনকী বিষয়টি নিয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে বিরোধী শিবির এবং বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনদের দাবি, ওয়াকফ বোর্ডের বিভিন্ন সম্পত্তি দখলের উদ্দেশেই ওই বিল আনছে কেন্দ্র। আর আজ সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘পয়সা নেই বলে কেন্দ্রীয় সরকার রেল ও এয়ার ইন্ডিয়ার মতো ওয়াকফ সম্পত্তিও বেচে দিতে চাইছে।’
ফিরহাদের এই মন্তব্য নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ মেয়রের কথা শুনে অনেকে মনে করছেন ওয়াকফ সম্পত্তি জলে যাবে না তো! অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এবং জামাত–ই–ইসলামী হিন্দের মতো প্রধান মুসলিম সংগঠনগুলির মতে, বিজেপি বহুদিন ধরেই নয়াদিল্লি–সহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওয়াকফ সম্পত্তি দখল করে ও পরে তা বিক্রি করে মোটা টাকা কোষাগারে ঢোকাতে চাইছে। তাই এই এনডিএ সরকার তড়িঘড়ি সংশোধনী বিল পাশ করাতে চাইছে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের পাল্টা যুক্তি, মুসলিম সমাজের দরিদ্র মানুষ এবং মহিলারা বহুদিন ধরে ওয়াকফ আইন সংস্কারের দাবি জানাচ্ছেন।