এবার এক মারাত্মক অভিযোগ উঠল খাস কলকাতায়। বেহালায় অবস্থিত এক গির্জার অধীনস্থ নার্সিং কলেজে কিছু নির্মাণ এবং মেরামতির কাজ চলছিল। আর সেখানে কিছু অবৈধ হচ্ছে বলে খবর পান তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর। তাই সেখানে গিয়ে ‘হম্বিতম্বি’ করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। যদিও কাউন্সিলর যে খবরটি পেয়েছিলেন সেটি ভুল ছিল। সেখানে কোনও বেআইনি কাজ হচ্ছিল না। এই ঘটনার জেরে অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন খ্রিস্টান চার্চ সংগঠন ‘ডায়োসেস অফ ক্যালকাটা’। ওই কাউন্সিলরের পাশে দাঁড়ালেন না মেয়রও।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বেহালা এলাকার ডায়মন্ডহারবার রোডে ‘ডায়োসেস অফ ক্যালকাটা’র অধীনে আছে সিস্টার ফ্লোরেন্স কলেজ অফ নার্সিং। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কদিন আগে মেরামতের কাজ শুরু হয়। এই মেরামতের কাজে বাধা দিতে আসেন কলকাতা পুরসভার ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা ১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুদীপ পোল্লে ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা। তাতে সমস্যা পড়েন গির্জা কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গির্জা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লেখা হয়। সেখানে গোটা ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। আর কাউন্সিলর সুদীপ পোল্লে অভিযোগ, নার্সিং কলেজ লাগোয়া পুকুর বুজিয়ে অবৈধ নির্মাণ চালানো হচ্ছে। তাতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: অ্যাম্বুল্যান্স–লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে রক্তাক্ত রাজপথ, কেশপুরে পাঁচজনের মৃত্যু, আহত বহু
সুদীপের এই অভিযোগকে সপাটে খারিজ করে দিয়েছেন গির্জা কর্তৃপক্ষ। এমন কোনও অবৈধ নির্মাণ বা কাজ করা হচ্ছিল না বলেই তাঁদের দাবি। এই বিষয়ে ‘ডায়োসেস অফ ক্যালকাটা’র প্রতিনিধি রাঘব নায়েক বলেন, ‘আমরা আমাদের নিজেদের জায়গাতেই কিছু ঘরের মেরামতের কাজ করছিলাম। এখানে কোনও নির্মাণের বিষয় ছিল না। কিন্তু ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুদীপ পোল্লে এবং তাঁর দলবল এসে কাজে বাধা দেয়। কাউন্সিলর বলে পাঠান যে, আমাদের উচ্চস্তরের কর্তৃপক্ষ যেন ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে।’ যদিও তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর সুদীপের পাল্টা অভিযোগ, ‘পুকুর বুজিয়ে নির্মাণকাজ হচ্ছিল। কলকাতা পুরসভা নোটিশ পাঠিয়েছে। গির্জা কর্তৃপক্ষ আসল কাগজ দেখাতে পারেননি। মিথ্যা অভিযোগ করে লাভ নেই।’
এই ঘটনা কানে যায় কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের। আর তা নিয়ে প্রশ্ন করে হয় মেয়রকে। ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘সুদীপের ওখানে যাওয়া ঠিক হয়নি। কারণ এক্ষেত্রে কাউন্সিলরের কোনও এক্তিয়ার নেই। আইন সেই এক্রিয়ার দেয়নি। বিষয়টি বিল্ডিং বিভাগকে জানানো যেত। তাদের এক্তিয়ার আছে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করে ব্যবস্থা নেওয়ার।’ কিন্তু কাউন্সিলর সুদীপ পোল্লের কথায়, ‘মেয়র আমাকে ফোন করে ছিলেন। আমি সব জানিয়েছি। এক বছর আগেই কলকাতা পুরসভা ওই নার্সিং কলেজে কাজ বন্ধের নোটিশ দিয়েছিল। আইনি পথে না পেরে এখন মিথ্যা অভিযোগ করছে।’