আয় বৃদ্ধি করতে এবার নয়া পদক্ষেপ করছে কলকাতা পুরসভা। শহরের রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে ভ্যাটের আবর্জনা পরিষ্কার করতে হয় কলকাতা পুরসভাকেই। তার সঙ্গে অনেক ফাঁকা বাড়ি, জমি আছে শহরে। যেখান থেকে এক লরি বর্জ্য তুলে ধাপায় পাঠাতে ভাড়া বাবদ খরচ লাগে ২২০০ টাকা। এই ফাঁকা জমি–বাড়ির কর থেকে সেই টাকা এবার তুলতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। কারণ ফাঁকা জমি–বাড়ির বর্জ্য সেই জমি ও বাড়ির মালিকের সাফ করার কথা। কিন্তু তা তাঁরা করছেন না বলে অভিযোগ। সেটা করতে হচ্ছে কলকাতা পুরসভাকে। না হলে ওই আবর্জনা, বর্জ্য থেকে জীবাণু ছড়িয়ে পড়বে। আর নাগরিকদের অসুখ করতে পারে।
এবার ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ অনেকটা করা গেলেও রোগটি হচ্ছে না এমন নয়। খোদ মহিলা চিকিৎসকেরই ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। আর শহরে এবং জেলায় ডেঙ্গি হচ্ছে। পরিমাণ আগের তুলনায় অনেক কম। কিন্তু নির্মূল হয়নি। তাই আবর্জনা, বর্জ্য পড়ে থাকলে তা থেকে মশার উপদ্রব বাড়বে। আর তা থেকে ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। আর এই ডেঙ্গি ঠেকাতে এবং শহরে স্বচ্ছ পরিবেশ গড়তে পরিত্যক্ত জমি–বাড়ি থেকে বর্জ্য সাফাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। আর টালিগঞ্জ, যাদবপুর, কসবা, বেহালার সংযোজিত এলাকায় এই কারণে নিজস্ব অর্থ গুনতে হচ্ছে কলকাতা পুরসভাকে।
আরও পড়ুন: সমগ্র শিক্ষা মিশনের এক টাকাও দেয়নি কেন্দ্র, বিধানসভায় ৩২৮৮ কোটি বঞ্চনার তথ্য ব্রাত্যর
কলকাতা পুরসভাকে এই কাজ করতে অযথা টাকা গুণতে হচ্ছে। যা থাকলে অন্যান্য কাজ করা যেত। এমনিতেই এবার রাজস্ব আয় কম হয়েছে। সেখানে বাড়তি কড়ি গুণতে নারাজ কলকাতা পুরসভা। এই বিষয়ে বর্জ্য অপসারণ বিভাগের মেয়র পারিষদ তথা যাদবপুর কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘কারও ফাঁকা জমি বা পরিত্যক্ত বাড়িতে জঞ্জাল পড়ে থাকলে তা থেকে রোগ ছড়ায়। শহরের রোগ ছড়ানোর এবং পরিবেশ দূষণ যাতে না হয় তার জন্যই পুরসভা নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থ খরচ করত। দায়বদ্ধতা থেকেই এই পরিষেবা দেওয়া হয়।’
এবার থেকে কলকাতা পুরসভা আগে নিজেদের টাকায় কাজটি করে দেবে। তারপর ওই টাকা সংশ্লিষ্ট ফাঁকা জমি বা পরিত্যক্ত বাড়ির মালিকদের করের বিলের সঙ্গে যুক্ত করে দেবে। ফলে একদিকে আয় বাড়বে অপরদিকে মালিকরা তাঁদের ফাঁকা জমি এবং বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন। তেমনই আশা করছে পুরসভা। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ওই জমা জঞ্জাল পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে নোটিশ দেওয়া হয়। দু’সপ্তাহের মধ্যে মালিকপক্ষের থেকে সাড়া না–পেলে কলকাতা পুরসভা নিজেই সাফাইয়ের ব্যবস্থা করে। এবারও তাই করা হবে। শুধু টাকার অঙ্ক ট্যাক্সের বিলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে।