কলকাতা শহরের যেখানে-সেখান অবৈধ বা বেআইনি পার্কিং, আর - তার জেরে পথচলতি মানুষের সমস্যা, যানজট, এমনকী দুর্ঘটনাও ঘটে। তবুও আজ পর্যন্ত এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হয়নি বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতির জন্য আমজনতা যেমন পুরকর্তৃপক্ষকে দায়ী করে, তেমনই গাড়ির মালিকদের ভূমিকাও এক্ষেত্রে কম কিছু নয়। কারণ, তাঁরা অনেকেই আইন বা নিয়মের তোয়াক্কা করেন না। নিজেদের ইচ্ছা মতো, যেখানে খুশি গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে দেন। তাতে কার কী সমস্য়া হল, সেসব নিয়ে এই দায়িত্বজ্ঞানহীন লোকেদের কিছুই যায় আসে না।
তবে, এবার হয়তো এমন অপকর্ম করলে তার খেসারত দিতে হবে! আর, তার ফলে আইন মেনে পার্কিং করতে বাধ্য হবেন আইনভঙ্গে অভ্যস্থ গাড়ির মালিক ও চালকরা।
কলকাতা পুরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশেষ ধরনের সফ্টওয়্যারের সাহায্যে একটি অ্য়াপ তৈরি করার প্রয়াস শুরু করেছে কলকাতা পুরনিগমের পার্কিং বিভাগ। এই অ্য়াপ তৈরি হয়ে গেলে তার মাধ্যমেই বেআইনি পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
কীভাবে কাজ করবে নয়া অ্য়াপ?
পুরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও গাড়ি শহরের কোথাও বেআইনি পার্কিং করলেই সেই গাড়ি ও তার নাম্বার প্লেটের ছবি তুলে নয়া অ্য়াপের মাধ্যমে সেই তথ্য মোটর ভেহিকল বিভাগের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই গাড়ির (মালিকের) বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে মোটর ভেহিকল বিভাগ এবং কলকাতা পুরনিগম - দুই পক্ষই আইনত ব্যবস্থা নিতে পারবে।
কর্তৃপক্ষের আশা, নয়া ব্যবস্থা চালু হলে হয়তো বেআইনি পাার্কিং বন্ধ করা সম্ভব হবে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে শহর কলকাতায় প্রায় ৩,৫০০টি বৈধ পার্কিং লট রয়েছে। দিনে ও রাতে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি পার্কিং করার নির্দিষ্ট নিয়ম ও ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু, সেই বৈধ পার্কিং লটগুলি ব্যবহার করতে হলে ৫০০ থেকে ১,০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।
আবার, গ্যারাজে গাড়ি রাখতে গেলে তার জন্যও ভাড়া দিতে হয়। তথ্য বলছ, এই সমস্ত খরচ এড়ানোর জন্যই অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেআইনিভাবে যেখানে-সেখানে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখে দেন কিছু মানুষ। নয়া অ্যাপ চালু হলে সেইসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কলকাতা পুরনিগমের মেয়র পারিষদ (পার্কিং) দেবাশিস কুমারকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে বেআইনি পার্কিং সমস্য়া মেটাতো লাগাতার অভিযান চালানো হয়, জরিমানা করা হয়, তবু কিছু মানুষের হুঁশ ফেরে না। তবে, অ্যাপ-নির্ভর ব্যবস্থাপনা চালু হলে ছবিটা বদলাবে বলেই আশা করছেন দেবাশিস।
সূত্রের খবর, বর্তমানে পার্ক সার্কাস, কসবা, পার্ক স্ট্রিট, উল্টোডাঙা, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, মানিকতলা, হাতিবাগান, বেহালা, টালিগঞ্জ, শিয়ালদার মতো এলাকাগুলি থেকে সবথেকে বেশি বেআইনি পার্কিংয়ের অভিযোগ আসে।