পুকুর ভরাট করা বেআইনি। আর তার উপর নির্মাণ করা আরও বেআইনি কাজ। এটা কলকাতা পুরসভার আইন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, পুকুর ভরাট করিয়েই দুটি অফিস গড়ে উঠেছিল কলকাতা পুরসভার। এখন তা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। সুতরাং সমস্যাটা এখন হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে বাঘাযতীন স্টেশন রোডের পাশে পুকুর ভরাট করিয়ে দু’টি অফিস বিল্ডিং তৈরি করা হয়েছিল। আর ওই বিল্ডিং দুটি কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত। যা এখন প্রকাশ্যে আসতেই হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে।
এই কথা জানতে পেরে এখন তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাঁটছে কলকাতা পুরসভা। দেখা হচ্ছে খতিয়ে যে, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে পুকুর ভরাট করে তৈরি করা দুটি বিল্ডিং কতটা বেআইনি পথে হেঁটে হয়েছে। কারণ এখানে ১১ নম্বর বরো চেয়ারম্যানের দফতর, অ্যাসেসমেন্ট, বিল্ডিং, লাইসেন্স–সহ একাধিক দফতরের অফিস রয়েছে। বেশ কয়েকটি দোকানঘরও আছে। সেখানে মাটি বসে গিয়ে দু’টি বিল্ডিং এখন বিপজ্জনক অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। যে কোনও মুহূর্তে অঘটন ঘটতে পারে। তার জেরে মানুষ মারা যেতে পারে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, দু’টি বিল্ডিংয়ের পিলারে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। তাই এই বাড়ি দু’টিকে ভেঙে নতুন করে গড়ে তোলা হবে। এখন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ক্ষমতায় এলে অসমের পথেই হাঁটব’, গো–মাংস নিষিদ্ধ করা নিয়ে আভাস দিলেন শুভেন্দু
এই আতঙ্কিত পরিবেশে কি কাজ করা যায়? উঠছে প্রশ্ন। যা নিয়ে বরো চেয়ারম্যান তারকেশ্বর চক্রবর্তী বলেন, ‘বামফ্রন্টের পুরবোর্ডের জমানায় বাড়িগুলি তৈরি হয়েছিল। আগে এখানে পুকুর ছিল। সেই পুকুর বুজিয়ে তার উপর বাড়ি দু’টি নির্মাণ করা হয়। বাড়ি দু’টি তড়িঘড়ি তৈরি করতে গিয়ে পাইলিংয়ের কাজ ঠিকঠাক করা হয়নি। তার জেরে এখন কয়েক বছরের মধ্যেই পিলারে ভাঙন ধরে গিয়েছে। আমি যে বাড়িতে বসি সেটাও নিরাপদ নয়। যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে। দু’টি বাড়িতেই পুরসভার একাধিক দফতর আছে। তাই বিপুল পরিমাণ সাধারণ মানুষের যাতায়াত আছে। তাই এই পুরো বাড়ি ভেঙে ফেলছি আমরা।’
বামফ্রন্টের সময় হলেও পুকুর ভরাট করে পুরসভার বিল্ডিং নির্মাণ তারা করেছিল কেমন করে? সেটা কি আইনি পথে করা হয়েছিল? বেআইনি কাজ হয়ে থাকলে তার এখন কি তদন্ত হবে? এইসব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কলকাতা পুরসভার অফিসারদের মনে। এখন পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পরিকল্পনা করা হয়েছে, পুরনো বিল্ডিং ভেঙে দু’টি জি–প্লাস ৬ বিল্ডিং গড়ে তোলা হবে। এখানে থাকা দোকানদারের নোটিশ ধরানো হয়েছে। এখানের দফতরগুলিকে সন্তোষপুরে এবং বাঘাযতীনে সরানো হবে। ঠিক হয়ে গেলে ফেরানো হবে।