এবার জমি জালিয়াতি ঠেকাতে কোমর বেঁধে নামছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভা সূত্রে খবর, কলকাতা শহরে বহু মালিকানাহীন জমি রয়েছে। আর সেইসব জমি খুব শীঘ্রই দখল করে নেবে কলকাতা পুরসভা। কারণ এই মালিকানাহীন জমি অন্য কেউ বা কারা দলিল জাল করে নিজের নামে করিয়ে নিতে পারে। সেটা ঠেকাতেই এমন উদ্যোগ নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। দলিল জাল করে অন্যের জমি হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। তাই এখন থেকে পরচা না দেখে আর জমি–বাড়ির মিউটেশনও করবে না কলকাতা পুরসভা। মেয়র পারিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এই উদ্যোগকে অনেকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। কারণ এই পদক্ষেপ যদি কলকাতা পুরসভা করে তাহলে মৌচাকে ঢিল পড়বে। কলকাতা পুরসভার শীর্ষকর্তারা জানান, কলকাতা শহরে প্রচুর মালিকানাহীন জমি পড়ে রয়েছে। যা জানে পুরসভা। সেগুলির এখন বাজারদর কয়েক হাজার কোটি টাকা। আইন অনুযায়ী দেখলে, কলকাতা শহরে যত মালিকানাহীন জমি পড়ে রয়েছে তার মালিক কলকাতা পুরসভাই। যদিও সেই জমির বড় অংশই ভোগ করছেন অন্য লোকজন। তারপর তাঁদের তাতে অধিকার জন্মে যাচ্ছে। ছাড়তে চাইছে না ওই দখল করা জমি। উলটে সেখানে বাড়ি–দোকানঘর তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: আলিপুরদুয়ারের চা–বাগানে সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ, কর্মহীন বিপুল শ্রমিক
আবার কোনও জমি ফাঁকা অবস্থাতেই পড়ে আছে। সেখানে প্রোমোটারদের নজর পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই ফাঁকা জমি ভ্যাট হিসাবে ব্যবহার করছেন। সেখান থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। মশার আবির্ভাব হচ্ছে। দূষণ ছড়িয়ে পড়ছে। তার জেরে নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। তাই সেই সব বহু মূল্যবান জমি দখলে এনে সাধারণের কাজে লাগাতে চায় কলকাতা পুরসভা। এমনকী ভবিষ্যতে সেই সব জমি নিলামেও তোলা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক মেয়র পারিষদ বলেন, ‘কলকাতা পুরসভার এখন নুন আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। টাকার অভাবে বড় কোনও কাজে করতে পারছে না। ঠিকাদারদের প্রাপ্য সময়ে মেটানো হচ্ছে না। তাই জমি বিক্রি করে যদি কিছু টাকা আসে তাতে কলকাতা পুরসভার আর্থিক কোষাগার বৃদ্ধি পাবে। আর জমিগুলির সদ্ব্যবহার হবে।’
কলকাতা পুরসভার অর্থ দফতর সূত্রে খবর, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য মেয়র থাকাকালীন জমি বিক্রি করে আনুমানিক ২৭০০ কোটি টাকা আয় করেছিলেন। যা কলকাতা পুরসভার কোষাগারকে স্ফিত করেছিল। শোভন চট্টোপাধ্যায় যখন মেয়র ছিলেন তখনও জমি বিক্রি করে কয়েকশো কোটি টাকা জমা পড়েছিল কলকাতা পুরসভার কোষাগারে। কিন্তু মেয়র ফিরহাদ হাকিমের জমানায় কোনও জমি বিক্রি হয়নি। এখন খাস কলকাতায় কয়েক হাজার একর মালিকানাহীন জমি পড়ে আছে। যা নিলামে তুলতে পারলে কলকাতা পুরসভার ভাঁড়ারে কয়েক হাজার কোটি টাকা চলে আসবে।