ট্যাংরায় একই বাড়িতে তিনজনের রহস্যজনক মৃত্যু। পরিবারের ৬জন সদস্যের মধ্যে তিনজনের দেহ উদ্ধার। একই বাড়ির দুই বধূ ও এক কিশোরী কন্যার দেহ উদ্ধার হয়েছে ওই বাড়িতে। আবার ওই পরিবারের দুই ভাই ও একজনের নাবালক সন্তানকে বাইপাস থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের গাড়িটি বাইপাসের ধারের পিলারে ধাক্কা দেয়। সেখানেই আহত
কবি সুকান্ত মেট্রো স্টেশনের কাছে তাদের গাড়িটি ধাক্কা দেয়। সেই গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় তিনজনকে। আহত প্রণয় দে, প্রসূন দে ও তাদের ১৫ বছর বয়সি ছেলেকে ভর্তি রয়েছে হাসপাতালে।
অর্থাৎ বাড়িতে তিনজনের দেহ। আর পরিবারের বাকি সদস্যদের উদ্ধার করা হল আহত অবস্থায় বাইপাস থেকে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় তাদের।
এদিকে গোটা ঘটনায় তদন্তে নেমে একাধিক মিসিং লিঙ্ক ধরা পড়েছে। তবে পুলিশের তদন্তের একটি বড় দিক হল সিসি ক্যামেরার ফুটেজ।
বাড়ির কাছের সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ১২টা ৫১ নাগাদ গাড়িটি গ্যারাজ থেকে বের করা হয়। এরপর দুজনকে গাড়িতে চাপতে দেখা যায়। একজন গাড়ির সামনে। অপরজন গাড়ির পেছন দিকে। পেছনে যে ভাই পরে উঠেছিলেন তার হাতে বোতলের মতো কিছু ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ১২টা ৫৪ মিনিট নাগাদ গাড়িটি বেরিয়ে যায়।
এরপর ৩টে বেজে ৩১ মিনিটে দুর্ঘটনা। ট্যাংরা থেকে অভিষিক্তা মোড় পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিমি। সেখানে যেতে এত সময় লেগে গেল? মাঝের সময়টা তারা কোথায় ছিলেন? পুলিশকে ভাবাচ্ছে এই বিষয়টিই। তবে পুলিশ ইতিমধ্য়েই ট্যাংরার বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরে গাড়িটি ঠিক কোন দিকে গিয়েছিল সেটা জানার জন্য় রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজগুলি খতিয়ে দেখছে।
এদিকে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে ওই আহতদের বয়ান অনুসারে যে বেশ কয়েকদিন ধরে তারা আত্মহত্যা করার চেষ্টা করছিল। এমনকী ছাদে পর্যন্ত গিয়েছিল। কিন্তু সেটা হয়নি। আর্থিক দেনায় ডুবে গিয়েছিলেন তারা। তারপরই এই সিদ্ধান্ত। সেই সঙ্গেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির পেছনের সিট থেকে ব্রেসলেট মিলেছে বলে খবর। গাড়িতে ব্রেসলেট রেখেছিলেন কেন? বড় ভাইয়ের নাবালক সন্তানের হাতে কাটা চিহ্ন। সেটা হল কীভাবে? সেফটি বেল্ট নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে।
প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, মঙ্গলবার সন্ধ্যে থেকে অন্ধকার ছিল ট্যাংরার বাড়ি। ছাদে সন্ধ্য়া আরতিও হয়নি। প্রতি সন্ধ্যাতেই সন্ধ্যা আরতি হত। বাড়ির সামনে কয়েক দফায় কয়েকজন এসেছিলেন। বেল বাজানোর পরে কেউ ভেতর থেকে দরজা খোলেনি। ভেতরের আলোও কেউ জ্বালায়নি।
পরে তিনটি আলাদা ঘরে তিনটি দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুজন মহিলার ও একজন কিশোরীর। মৃত কিশোরীর দেহে ক্ষতচিহ্ন নেই। খুন নাকি আত্মহত্যা এই প্রশ্নটাই ভাবাচ্ছে পুলিশকে।