বড় একটা কথা বলে না। একেবারে চুপটি করে বসে থাকে। কিছুদিন আগেই প্রিজন ভ্যানের জানালা থেকে চিৎকার করত যে বন্দি সে এখন একেবারে চুপচাপ। কলকাতার ঠান্ডা গলির সঞ্জয় জেলেও একেবারে ঠান্ডা। কেমন যেন খোলসের মধ্য়ে গুটিয়ে নিয়েছে নিজেকে। আরজি কর কাণ্ডে ধরার পড়ার পর থেকে বাড়ির লোকজনও কেউ দেখা করেনি। গত শনিবার দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে সঞ্জয় রায়কে। এরপর সোমবার শিয়ালদা আদালতের বিচারক তাকে আমৃত্য কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। তারপর কী কোনও পরিবর্তন হয়েছে সঞ্জয়ের?
সূত্রের খবর, প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের পহেলা বাইশ নম্বর ওয়ার্ডের তিন নম্বর সেলে রয়েছে সঞ্জয়। সাজা শুনে ফিরে আসার পরেও তার স্বভাবের যে খুব কিছু পরিবর্তন হয়েছে তেমনটা নয়। কেমন যেন ভাবলেশহীন।
সোমবার আদালত থেকে বের হওয়ার সময়তেও কোথাও কোনও চিৎকার চেঁচামেচি কিছু করেনি সঞ্জয়। পুলিশের ঘেরাটোপে একেবারে চুপচাপ। জেলেও খানিকটা তেমনই।
তবে সূত্রের খবর প্রিজন ভ্যানের জানালা থেকে যে সঞ্জয় কিছুদিন আগেও চিৎকার করেছিল সে নির্দোষ, তাকে ফাঁসানো হয়েছে, সেই সঞ্জয়ের সঙ্গে জেলের সঞ্জয় কিন্তু মেলে না। জেলের সঞ্জয় একেবারে চুপচাপ। সবসময় নিজেকে গুটিয়ে রাখে। মেপে কথা বলে। কয়েকটি ক্ষেত্রে সে যে নির্দোষ সেটা বোঝানোর জন্য সামান্য কিছু কথাবার্তা জেলের ভেতরে বলেছে কারারক্ষীদের। তবে সবটাই মাপা।
এবার সঞ্জয়কে কিছু কাজ করতে হবে জেলের অন্দরে। প্রাথমিকভাবে তাকে বাগানের কাজ দেওয়া হতে পারে।
তবে সূত্রের খবর, প্রথমে যখন সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে জেলে আনা হয়েছিল তখনকার সঞ্জয়ের সঙ্গে কিন্তু আজকের সঞ্জয় একেবারেই মেলে না। সেই সময় সঞ্জয় ছিল দাপুটে। রীতিমতো চিৎকার করত জেলে। ধীরে ধীরে জেল জীবনে অভ্যস্ত হতে শুরু করে। সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কলকাতা পুলিশ লেখা বাইক চেপে একটা সময় এলাকায় কার্যত দাপট দেখাত সঞ্জয়। সঞ্জয়ের পুরনো পাড়ার এক বন্ধু জানিয়েছিলেন, একটা সময় বেশ রাত করে এলাকায় আসত সঞ্জয়। বাইকে চেপে। বাড়িতে ঢুকত না। ফুটপাতে বসেই মদ্যপান। এরপর রাত গভীর হলে ফিরে যেত কোথায় যেন! সম্ভবত ব্যারাকে ফিরত সে।
সেই সঞ্জয় জেলে গিয়ে একেবারে চুপচাপ। প্রথমদিকে কিছুটা দাপট দেখাত। তবে যত দিন গিয়েছে ততই বুঝে গিয়েছে এভাবে জেলের মধ্য়ে দাপট দেখিয়ে কিছু হবে না। তারপরই ধীরে ধীরে নিজেকে বদলাতে শুরু করে সঞ্জয়।