সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন এখনও জেলবন্দি। বছরের পর বছর ধরে তিনি জেলের অন্দরে রয়েছেন। ২০১৩ সালের সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্য়ায়কে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এরপর সিবিআই ও ইডি রাজ্য়ের একাধিক প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রীকেও গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু তারা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। তবে সুদীপ্ত-দেবযানী এখনও জেলের অন্দরে।
এদিকে সারদায় টাকা রেখে বহু মানুষ কার্যত সব হারিয়েছেন। কষ্টের টাকা হারিয়েছেন তাঁরা। এনিয়ে এখনও ক্ষোভ রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্য়ে। তবে দেখতে দেখতে প্রায় এক যুগ পেরিয়ে যেতে চলল। তবুও এখনও জামিন মেলেনি সুদীপ্ত-দেবযানীর।
এদিকে সারদার তদন্ত ও বিচার হচ্ছে না এই অভিযোগ তুলে সংশোধনাগার থেকে বন্দি হিসাবে হাইকোর্টে প্রিজনার্স পিটিশন দাখিল করেছিলেন সুদীপ্ত। এরপরই হাইকোর্ট রাজ্য সরকার ও সিবিআইয়ের কাছ থেকে রিপোর্ট চায়। এদিকে আদালতের প্রশ্নের উত্তরে সিবিআই জানায়, তারা সারদা সংক্রান্ত সব মিলিয়ে ৭৬টি মামলার তদন্ত করেছে। সুদীপ্তর আইনজীবী জানিয়েছেন,সিবিআইয়ের পাশাপাশি রাজ্যও সারদা নিয়ে তদন্ত করছে। প্রায় ১২ বছর পরে বালুরঘাটে নতুন মামলা শুরু হয়েছে। তবে সিবিআইয়ের পাশাপাশি রাজ্য একই বিষয় নিয়ে তদন্ত করতে পারে না।
রাজ্যের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে জানানো হয়েছে, রাজ্য পুলিশের ২২টি মামলায় এখনও সুদীপ্ত সেনের জামিন হয়নি। অন্য রাজ্যের সুদীপ্তর নামে ১৭টি প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট এখনও বকেয়া রয়েছে। বালুরঘাটেও তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।
এদিকে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, বালুরঘাটের আদালতে সুদীপ্তকে সশরীরে বা ভার্চুয়ালি হাজির করানো যাবে। যে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট রয়েছে সেখানে সুদীপ্ত আইনি পদক্ষেপ নিতে পারবেন। চার সপ্তাহ পরে ফের এই মামলার শুনানি হবে হাইকোর্টে। সিবিআইকে তাদের মামলাগুলি নিয়ে বিস্তারিত জানাতে হবে।
প্রিজনার্স পিটিশনে কী লিখেছিলেন সুদীপ্ত?
সম্প্রতি জেল থেকে সরাসরি আদালতে প্রিজনার্স পিটিশন দাখিল করেছিলেন সুদীপ্ত সেন। তারপর আদালতের হস্তক্ষেপে কিছুটা হলেও নড়েচড়ে বসে তদন্তকারী সংস্থাগুলি। ওই পিটিশনে সুদীপ্ত লিখেছিলেন তার হয়ে কোনও আইনজীবী নেই। তারপর আইনজীবী নিয়োগ করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। এরপর তার আইনজীবী নিয়োগ করা হয়। তবে সুদীপ্তর বিরুদ্ধে কার্যত মামলার পাহাড় ছিল। তবে বহু মামলায় তিনি জামিনও পেয়ে গিয়েছেন। ভিন রাজ্যেও সুদীপ্তর বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় ১৭টি সমন বকেয়া রয়েছে।
এবার কি জামিনের পথে কিছুটা এগিয়ে গেলেন সুদীপ্ত?