জুনপুটে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপন কেন্দ্র করার কথা। সেই উৎক্ষেপন কেন্দ্র তৈরির প্রথম ধাপ হিসাবে লঞ্চিং প্যাড তৈরি করা হয়েছিল। কাঁথি ১ ব্লকের জুনপুটের এই ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপন কেন্দ্র নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন অনেকেই। কিন্তু বর্তমানে তার হাল কী?
কিছুদিন আগে অনেক আশা জাগিয়ে সেখানে লঞ্চিং প্যাড তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেই লঞ্চিং প্যাডে মিসাইল উৎক্ষেপন তো দূরের কথা সেখানে এখন শুঁটকি মাছ শুকোচ্ছে।
সেখানে বর্তমানে শুঁটকি মাছ শুকোচ্ছে। জাল মেরামতির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আসলে কী হওয়ার কথা ছিল আর হচ্ছেটা কী!
এখানে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের অধীনস্থ ডিআরডিওর ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপন করার কথা ছিল। গত মার্চে এই ধরনের ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপনের কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। গত জুলাইতে সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপনের কথা ছিল। কিন্তু সেটাও হল না।
কেন্দ্রীয় সরকারের বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্র ও সিআরজেড কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র নেওয়ার পরেই জুনপুটের ওই এলাকায় সেন্টার ফর ফায়ার, এক্সপ্লোসিভ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সেফটির জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল। প্রায় ৮.৭৩ একর জমি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পেয়েছিল ডিআরডিও। এদিকে প্রাথমিকভাবে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে এখানে ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপন কেন্দ্র তৈরি নিয়ে নানা আপত্তি তোলা হয়েছিল। তাদের মূল আপত্তির জায়গা ছিল যে যেদিন ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপন করা হবে সেদিন মৎস্যজীবী ও গ্রামবাসীদের এলাকা থেকে সরে যেতে হবে। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের প্রতিবেদন অনুসারে।
কিন্তু সেখানে ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপন তো দূরের কথা সেখানে এখন মাছ শুকোচ্ছে। এমনকী এনিয়ে নানা ধরনের তরজাও চলছে পুরোদমে।
এদিকে গত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রতিবেদনে জানা গিয়েছিল, ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপণ যদি জুনপুটে বাস্তবে কার্যকরী হয় তাহলে সেটা এই রাজ্যে হবে প্রথমবার। এই বিষয়ে সেই সময় পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক তনবীর আফজল বলেছিলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে অথবা মার্চ মাসের শুরুতে ডিআরডিও ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করবে। একটা রকেট ছাড়া হবে বালেশ্বর থেকে। আর একটা ছাড়া হবে জুনপুট থেকে। দু’টো ক্ষেপণাস্ত্রকে নিয়ে গবেষণা করার জন্য জেলার এই জায়গাটি বেছে নিয়েছে ডিআরডিও।’ আর তাই রাজ্য সরকার জমিও দিয়েছে। সব সহযোগিতা করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
তবে এই ক্ষেপনাস্ত্র কেন্দ্র নিয়ে প্রাথমিকভাবে এলাকার মৎস্যজীবী ও স্থানীয়দের একাংশ আপত্তি তুলেছিলেন। মৎস্যজীবীদের আশঙ্কা ছিল, এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণে দূষণ বাড়বে। তার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জীবন–জীবিকা। তাই এটা ঠেকাতে আন্দোলনের কথাও ভাবছেন তাঁরা। কারণ এসবের সঙ্গে জীবন–জীবিকা জড়িয়ে আছে। তাই এখানকার বাসিন্দারা জেলার সরকারি আধিকারিকদের কাছে ছুটছেন। বিষয়টি ঘটলে কতটা ক্ষতি হবে জানতে।
তবে শেষ পর্যন্ত সেখানে এখনও ক্ষেপনাস্ত্র উৎক্ষেপন হয়নি। বরং সেখানে শুকোচ্ছে শুঁটকি মাছ।