২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে কলকাতায় দূষণের মাত্রা গত কয়েকবছরের তুলনায় দূষণের মাত্রা অনেকটাই কম ছিল। অনেকেই এই ডিসেম্বর মাসের কম দূষণের জন্য আবহাওয়া এবং প্রশাসনের তৎপরতাকে ক্রেডিট দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের পক্ষ থেকে গত বছর কলকাতায় দূষণের মাত্রা ছিল একিইআই (১০১–২০০)। এই মাত্রা ২০২৪ সালে ক্রমশ বেড়েছে। দূষণের মাত্রা ক্রমশ কমেছে। গত পাঁচ বছর ধরে বাতাসে দূষণের মাত্রা ক্রমশ কমেছে। কলকাতার প্রতি ঘনমিটার বাতাসে ভাসমান কণা পিএম ২.৫–এর পরিমাণ ২০২১ সালে ছিল ৫৭.৬ মাইক্রোগ্রাম। সেটাই প্রত্যেক বছর নিয়মিত হারে কমতে কমতে ২০২৪ সালের এসে পৌঁছেছে ৪৪.৮ মাইক্রোগ্রামে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে একটিও ভেরি পুওর দিন নেই।
এদিকে ২০১৯ সাল থেকে হিসেব কষলে দেখা যায়, কলকাতার বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে পিএম ২.৫–এর পরিমাণ কমেছে ২১.৫ শতাংশ। জাতীয় পরিচ্ছন্ন বায়ু প্রকল্পে দেশের নানা শহরে বায়ুদূষণ কমাতে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেটাতে কলকাতার রিপোর্ট কার্ড এরকমই। এককথায় এটা কলকাতার জন্য় অত্যন্ত ভাল খবর। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে একটি পুওর ডে ছিল। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে ছিল ২০টি এমন দিন ছিল। বাতাসে ভাসমান কণাকে তাদের মাপের ভিত্তিতে দু’ভাগে বিভক্ত করা হয়। পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম) ১০ এবং ২.৫। এই দুই কণার মধ্যে পিএম ২.৫–কে স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর বলে ধরেন আবহবিদরা।
আরও পড়ুন: ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায়’, ক্যানিংয়ের পঞ্চায়েত প্রধানকে খুনের হুমকি হোয়াটসঅ্যাপে
অন্যদিকে কলকাতা–সহ বাংলার বেশ কয়েকটি শহরের নাম উঠে আসে দূষণ কম থাকার তালিকায়। ২০২৪ সালের শেষ হওয়ার পর গত পাঁচ বছরে এই প্রকল্প কোন জায়গায় আছে সেটারই রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করা হল। সেখানেই দেখা গিয়েছে, কলকাতার ধারাবাহিক উন্নতি হয়েছে দূষণহীন বাতাসের জেরে। এই উন্নতিকে ‘প্রশাসনিক দক্ষতা’র সুফল বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। এবার কেন দূষণ কমল? সেটার পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। তার মধ্য়ে অন্য়তম—এবার ঠান্ডা তুলনায় কিছুটা কম। তার সঙ্গে হালকা বৃষ্টি হয়েছে। বাতাস সেভাবে দ্রুতগতিতে বয়ে যায়নি। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, কলকাতা পুরসভাও পদক্ষেপ করেছে।
এছাড়া বাতাসে জলের স্প্রে দেওয়া শুরু করেছিল কলকাতা পুরসভা। যা এখনও চলছে। তাই বাতাসের মান ভাল আছে। দূষণ সেভাবে কাবু করতে পারেনি। এই বিষয়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘পিএম২.৫ প্রতি ঘনমিটারে ৪৪.৮ মাইক্রোগ্রাম হয়েছে। এটা আমাদের জন্য খুবই ভাল খবর। তবে এখনই আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। আমাদের লক্ষ্য বাতাসে পিএম২.৫–এর পরিমাণ ঘনমিটারে ৪০–এর নীচে নিয়ে যাওয়া।’ আর এই বায়ুদূষণ প্রতিরোধের সাফল্যের জন্য তিনি কলকাতা পুরসভাকেও সমান কৃতিত্বের অধিকারী বলে জানান, ক্রমাগত সচেতনতার প্রচার এবং নানা ধরনের বিকল্প যন্ত্রের ব্যবহারেই এমন সাফল্য এসেছে।