এক কাপ লিকার চা পান করতে কত খরচ হতে পারে? এই প্রশ্ন এখন রাজ্য–রাজনীতির ময়দানে ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে। কারণ কলকাতা বিমানবন্দরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এসে এক কাপ লিকার চা পান করলেন। তারপর তাঁকে যে বিলটি মেটাতে হল তাতে তাঁর চোখ কপালে উঠেছে। একদা কেন্দ্রের নানা গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের মন্ত্রী ছিলেন তিনি। এমনকী ছিলেন অর্থমন্ত্রীও। তখন এমন হাল হয়নি। এখন সরকার বদলেছে। পরিস্থিতি বদলেছে। কংগ্রেস প্রধান বিরোধী দল হয়েছে। তারপরই এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে সেই পোড়খাওয়া নেতার। হ্যাঁ, তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। চা পান করতে গিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে বিরল অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলেন। আর সেই ঘটনাটি তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরলেন।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে নিয়ে এসে আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন পি চিদম্বরম। শুধু তাই নয়, এই বিষয়টি নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপও চেয়েছেন। কারণ একটা লিকার চায়ের দাম কখনওই ৩০০ টাকার উপর মূল্য হতে পারে না! শুনতে অবাক লাগলেও এমন অর্থই গুণতে হয়েছে প্রবীণ নেতাকে। তাতেই তিনি চমকে উঠেছেন। প্রথমে মনে করেছিলেন বোধহয় অন্যজনের বিল তাঁকে দেওয়া হয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে এবং বিল দেখে বুঝতে পারেন ওটা তাঁরই এক কাপ লিকার চায়ের দাম। যা দেখে বেশ চাপে পড়ে যান চিদম্বরম।
আরও পড়ুন: কলতান শ্রীঘরে যেতেই সাবধানী পদক্ষেপ সিপিএমের, কথা এখন শুধু হোয়াটসঅ্যাপ কলে
কলকাতা বিমানবন্দরের টার্মিনালে তখন বিমানের জন্য অপেক্ষা করছিলেন চিদম্বরম। শুধু বই পড়ে সময় কাটছে না। তাই চা পান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। তাই ওখানে থাকা একটি সংস্থায় চা অর্ডার করেন চিদম্বরম। পাতা ভিজানো লিকার চায়ের অর্ডার তিনি করেছিলেন। তারপরই টি–ব্যাগ সহ এক কাপ গরম জল এসে পৌঁছয়। তখন চা পান করে নেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। চোখ কপালে ওঠে চায়ের বিল দেখে! গরম জল এবং টি–ব্যাগের দাম ধরা হয়েছে ৩৪০ টাকা! এটা কেমন করে সম্ভব? তাহলে সাধারণ মানুষ এখানে এসে কী খাবেন? এই প্রশ্ন তুলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চান চিদম্বরম। এই ঘটনার পাশাপাশি চিদম্বরম উল্লেখ করেন, কয়েক বছর আগে চেন্নাই বিমানবন্দরে গরম জল এবং একটি টি–ব্যাগের জন্য দাম পড়েছিল ৮০ টাকা। এবার পড়ল ৩৪০ টাকা!
পি চিদম্বরমের এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরতেই জোরালো সমর্থন পান। বহু মানুষ তাঁকে সমর্থন করে লিখেছেন এমন আকাশছোঁয়া দামের কথা। একাধিক সাধারণ বিমানযাত্রীরা কলকাতা বিমানবন্দরের চায়ের দাম নিয়ে সরব হয়েছেন। এই দাম আম জনতার সাধ্যের বাইরে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। এরপরই নড়েচড়ে বসে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। পি চিদম্বরমকে জানানো হয়েছে, তাদের পক্ষ থেকে চায়ের দামের বিষয়টি নজর রাখা হচ্ছে। দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। আর কাজ শুরু হবে। এমনকী যে পদক্ষেপ করা হবে সেটা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীকে জানানো হবে। বিষয়টি নজরে আনার জন্য পি চিদম্বরমকে ধন্যবাদও জানিয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।