চারিদিকে শুধুই বরফ। তাপমাত্রা সবসময়ই শূন্যের নিচে। একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে সেখানে টিকে থাকাটাই চ্যালেঞ্জ। বিশ্বের সবচেয়ে দুর্গম সেই জায়গাগুলির মধ্যে একটি হল অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ। সেই আন্টার্টিকায় ৪২ কিলোমিটারের ম্যারাথন সম্পন্ন করলেন কলকাতার উদ্যোক্তা পীযূষ জাজু। শনিবার আন্টার্টিকায় আয়োজিত মর্যাদাপূর্ণ এই ম্যারাথন তিনি সম্পন্ন করেছেন প্রায় সাড়ে ৬ ঘণ্টায়। উল্লেখ্য, কলকাতা থেকে এই প্রথম কোনও ব্যক্তি অ্যান্টার্কটিকায় আয়োজিত এই ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করলেন।
আরও পড়ুন: সপ্তাহান্তে কলকাতা পুলিশের হাফ ম্যারাথন, শহরের কোন কোন রাস্তায় চলবে না গাড়ি?
জানা গিয়েছে, কিং জর্জ দ্বীপের বরফের ভূখণ্ডে এই ম্যারাথনের আয়োজন করা হয়। তাতে সবমিলিয়ে ২৬টি দেশের ১৫০ জন এই ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মূলত জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যকর ও আরও উন্নত জীবনধারা প্রচারের লক্ষ্যে এই ম্যারাথনে অংশ নেন সৌরশক্তি সম্পর্কিত কোম্পানি ‘ওনার্জি সোলার’-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা পীযূষ। এই অংশগ্রহণ শুধুমাত্র ধৈর্যের পরীক্ষা ছিল না, মানুষকে পরিবেশ নিয়ে বার্তা দিতে এই পদক্ষেপ তাঁর।
একটি প্রেস বিবৃতিতে পীযূষ বলেছেন, ‘আমাদের গ্রহ যে ধীরে ধীরে চরম বিপদের দিকে এগোচ্ছে। তার স্পষ্ট নিদর্শন হল অ্যান্টার্কটিকা। এই ম্যারাথনের মাধ্যমে আমি পরিবেশবান্ধব শক্তির আরও বেশি ব্যবহার ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার বার্তা দিতে চাই। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে প্রতিটি ছোট পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ।’
অনার্জি সোলারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পীযূষ মাত্র দু'বছর আগে থেকে বিভিন্ন ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেছেন। তবে এই অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি একাধিক সাফল্য পেয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে আয়রনম্যান ৭০.৩ ট্রায়াথলন (দৌড়, সাইকেল চালানো এবং সাঁতার কাটা একসঙ্গে)। বিশ্বের সর্বোচ্চ তুষার ম্যারাথনে ২১ কিলোমিটার দৌড় এবং এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে ট্রেকিংও রয়েছে।
তিনি জানান, সৌরশক্তি নিয়ে কাজ করার সময় তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সরাসরি লক্ষ্য করেন। তাই এনিয়ে বার্তা পৌঁছে দিতে অ্যান্টার্কটিকাকে বেছে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘স্বাস্থ্য এবং গ্রহকে অগ্রাধিকার দেওয়া কখনই পছন্দ হওয়া উচিত নয়, বরং এটি প্রতিশ্রুতি হওয়া উচিত।’ জানা গিয়েছে, এই ম্যারাথনের প্রস্তুতির জন্য পীযূষ তুষারাবৃত হিমালয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।