করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে কি এবার ৪৫ তম কলকাতা বইমেলা হবে? বইপ্রেমীরা আপাতত সেই উত্তরের সন্ধানে আছেন। তাঁদের কিছুটা আশ্বাস দিল পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড। বইমেলার উদ্যোক্তারা জানালেন, কলকাতা বইমেলা আয়োজনের বিষয়ে আশাবাদী তাঁরা। তবে নির্ধারিত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে তা হবে না।
বইমেলা আয়োজনের বিষয়ে নিয়মিত রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে গিল্ড। সরকারের নির্দেশের অপেক্ষা করা হচ্ছে। গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এবার কলকাতা বইমেলা আয়োজনের বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু আন্তর্জাতিক অতিথিদের অংশগ্রহণের মতো বিভিন্ন বিষয়ের জন্য আমরা ঠিক বলতে পারছি না যে কখন হবে।’
তবে বইমেলা যে হারে দর্শকের আগমন হয়, করোনা পরিস্থিতিতে তা কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। গতবার বইমেলায় প্রায় ২৫ লাখ মানুষের সমাগম হয়েছিল। করোনা-বিধি সুষ্ঠুভাবে বইমেলা আয়োজনের বিষয়টি বড়সড় চ্যালেঞ্জিং বলে জানিয়েছেন ত্রিদিববাবুও। তিনি বলেন, ‘এত বিপুল সংখ্যক বইপ্রেমীদের প্রবেশ আমরা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করব? এটা ছোটো, জেলার বইমেলা নয়। বরং এটা বড়সড় অনুষ্ঠান। পুরো বিষয়টির পরিকল্পনার সময় এরকম যাবতীয় বিষয়গুলিকে মাথায় রাখতে হচ্ছে।’
যদিও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে না হলে পরে কবে বইমেলা হবে, তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এবার মার্চ থেকেই রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে যাবে। ভোট প্রক্রিয়া পুরোপুরি মিটে যাওয়ার তীব্র গরমে আদৌও কি বইমেলা আয়োজন করা সম্ভব হবে? তারপর তো আবার বর্ষা। সেই সময় বইমেলার আয়োজন করা আরও দুষ্কর হয়ে দাঁড়াবে।
তারইমধ্যে অবশ্য বইমেলার বিষয়ে ব্রিটেন, রাশিয়ার মতো দেশ খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে। গিল্ড সভাপতি জানান, এবারের থিম হল বাংলাদেশ। সেজন্য এবারের বইমেলাকে বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানকে উৎসর্গ করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। একইসঙ্গে অন্যবারের মতো দেশ-বিদেশে অনেক অতিথি আসার কথা ছিল। তাঁদের উপস্থিতি ছাড়া বইমেলা অর্থহীন হয়ে দাঁড়াবে বলে দাবি করেছেন গিল্ড সভাপতি। তাঁর বক্তব্য, বিদেশি প্রকাশক এবং অতিথিরা না থাকলে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক তকমা হারাতে পারে কলকাতা বইমেলা।