ক্রমশ উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে কলকাতার করোনা পরিস্থিতি। প্রায় হাজার ছুঁই ছুঁই আক্রান্তের সংখ্যা। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। পরিস্থিতি এমনই যে ‘রাতে ঘুম আসছে না’ বলে জানিয়েছেন, কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের প্রধান ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু তাঁরই এক মন্তব্যে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ফিরহাদের দাবি, কলকাতায় করোনা ছড়িয়েছেন ওলা, উবের ও ট্রাকচালকরা। রাজ্য ও শহর ক্ষমতায় থেকে কী করে নির্দিষ্ট পেশার মানুষের ওপর মহামারী ছড়ানোর দায় চাপানো যায় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
দিন কয়েক আগে এক সাক্ষাৎকারে ফিরহাদ বলেন, ‘বেলগাছিয়া, রাজাবাজার এলাকায় প্রথম সংক্রমণ ছড়িয়েছিল ওলা, উবের চালকদের মাধ্যমে। এরা বিমানবন্দর থেকে যাত্রী তুলতেন। বিদেশ থেকে আসা একাধিক যাত্রীদের থেকে সংক্রমিত হয়েছেন চালকরা। তার পর তাঁরা বেলগাছিয়া, রাজাবাজারের মতো ঘিঞ্জি এলাকায় বাড়িতে ফিরেছেন তাঁরা। সেখান থেকেই শহরের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ছড়িয়েছে করোনা।’
ফিরহাদ হাকিমের তত্ত্ব ঠিক বলে মেনে নিলেও প্রশ্ন হল সেই সময় রাজ্য সরকার কী করছিল? কেন আগে ভাগে বিমানবন্দরে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করেনি রাজ্য সরকার? যে বিপদের গুরুত্ব রাজ্যের মন্ত্রী ও আমলারা বুঝতে পারেননি একজন ট্যাক্সি চালক তা বুঝবেন এটা ফিরহাদবাবু আশা করেন কী করে?
একই সঙ্গে বড়বাজারে সংক্রমণ ছড়ানোর দায় ট্রাক চালক ও খালাসিদের ওপর বর্তেছেন ফিরহাদ। তাঁর বক্তব্য, ‘বড়বাজারে সংক্রমণ ট্রাক চালক ও খালাসিরা নিয়ে আসছেন।’ প্রশ্ন হল তাহলে পশ্চিমবঙ্গের সীমানায় ঢোকার সময় ট্রাকচালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হল না কেন? গোড়া কেটে আগায় জল ঢালতে ঢালতে ক্লান্ত ফিরহাদ সাহেব কি প্রলাপ বকছেন? শহরের মুখ্য প্রশাসক তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রীর এই বয়ানে চালকদের প্রতি যদি স্থানীয়দের রোষ তৈরি হয় তাহলে তা সামলাবে কে?